কৌশলী: তৃণমূলের সংসদীয় অফিসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। নিজস্ব চিত্র
দিল্লির পরে এ বার লখনউ! অন্তত আজ সংসদে বসে সেই ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক বছর পরেই লোকসভা নির্বাচন। হাতে সময় কম। দিল্লিও আসেন তিনি কালে-ভদ্রে। তাই আজ দীর্ঘ দিন বাদে সংসদে এসেই একাধিক আঞ্চলিক দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের প্রাথমিক কাজটি শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সংসদে দলীয় দফতরে সপা নেতাদের উপস্থিতিতে মমতা জানান, তাঁর ইচ্ছে পরবর্তী বৈঠকটি যেন লখনউ শহরে হয়। মমতার কথায়, ‘‘আশা করি এর পরের বৈঠকটি লখনউতে ডাকবেন অখিলেশ-মায়াবতী। আমি তাহলে চা খেতে সেখানে যাব।’’ ১০ এপ্রিল অসুস্থ ডিএমকে নেতা করুণানিধিকে দেখতে মমতা চেন্নাই যেতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
মমতা মনে করছেন, নোট বাতিল, জিএসটি বা ব্যাঙ্ক দুর্নীতির মতো ঘটনা দেশে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মানুষের সেই ক্ষোভকেই এখন বিরোধী দলগুলিকে কাজে লাগাতে হবে বলেই মত মমতার। তাই এনসিপি থেকে আরজেডি, ডিএমকে থেকে বিজেডি, সপা-বসপার মতো বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলকে এক ছাতার তলায় আনা প্রয়োজন বলেই মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে অখিলেশ ও মায়াবতী হাত মেলানোয় দু’টি জেতা আসন খুইয়েছে বিজেপি। বিজেপির বিজয়রথ থামাতে ওই জুটি আগামী ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেই বলে মনে করছে সব শিবির। মমতা বলেন, ‘‘লোকসভায় ওই দুই দল হাত মেলালে বিজেপির পক্ষে উত্তরপ্রদেশে দাঁত ফোটানো কঠিন।’’ উত্তরপ্রদেশে যাতে দু’দলের জোটের পথ মসৃণ হয় সে জন্য বার্তা দিতে সক্রিয় হন মমতাও। তাঁর সঙ্গে আজ দেখা করতে আসা সপা সাংসদ রামগোপাল যাদবের মাধ্যমে অখিলেশের কাছেও বার্তা পাঠান তিনি। মমতা আজ জানিয়েছেন, যে রাজ্যে যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী সেই রাজ্যে সেই দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে নামুক। যেমন অন্ধ্রপ্রদেশে টিডিপি, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে। আর বিজেপি বিরোধী বাকি দলগুলির লক্ষ্য হবে পিছন থেকে সেই দলকে সর্বাত্মক ভাবে সাহায্য করে যাওয়া।
বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মমতা পাশে চাইছেন এনডিএ-র শরিক দলগুলিকে। কারণ উত্তরপ্রদেশ উপনির্বাচনের পর থেকেই বেসুরে বাজতে শুরু করেছেন রামবিলাস পাসোয়ান, মেহবুবা মুফতির মতো এনডিএ-র শরিক নেতারা। মমতার কথায়, ‘‘পিডিপি বা শিবসেনার সঙ্গে বিজেপি কেমন ব্যবহার করছে তা সকলেই জানে। শুধু বিরোধী নয়, শরিক দলের সঙ্গেও মোটেই ভাল ব্যবহার করছে না তারা।’’ ঘনিষ্ঠ শিবিরেও তিনি জানিয়েছেন, শরিকদের অসন্তোষকে ব্যবহার করে জোট ভাঙতে হবে। বিজেপিকে রুখতে বিহারে নীতীশ কুমারকেও যে তাঁর প্রয়োজন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। লালু-কন্যা মিসা ভারতীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘নীতীশের বিষয়টি লালুজি দেখে নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy