Advertisement
E-Paper

নিজের কিডনি বিক্রি করে বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসা করালেন যাবজ্জীবন বন্দি

নিজের হাতে কাকাকে খুন করেছিলেন। কাকার শরীর থেকে রক্ত ছিটকে পড়েছিল তাঁর গায়ে। তারপরই সম্বিৎ ফেরে। দুষ্কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করতে নিজের কিডনি বিক্রির টাকায় বন্ধুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:০৪
সুকুমারন এবং ওই মহিলা। ছবি: সংগৃহীত।

সুকুমারন এবং ওই মহিলা। ছবি: সংগৃহীত।

নিজের হাতে কাকাকে খুন করেছিলেন। কাকার শরীর থেকে রক্ত ছিটকে পড়েছিল তাঁর গায়ে। তারপরই সম্বিৎ ফেরে। দুষ্কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করতে নিজের কিডনি বিক্রির টাকায় বন্ধুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন।

ওই ব্যক্তির নাম সুকুমারন। তিনি কেরলের পাত্তাম্বির বাসিন্দা।১১ বছর আগে মোবাইলের টাওয়ার বসানোকে কেন্দ্র করে কাকার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। রাগের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারেন কাকার উপরে। ফিনকি দিয়ে কাকার দেহ থেকে রক্ত ছিটকে পড়ে তাঁর গায়ে। আর তারপরই সম্বিৎ ফেরে তাঁর। এ কি করলাম আমি! নিজেই ফোন করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন। তারপর থেকে ২০১৭ সাল অবধি জেলেই কাটিয়েছেন তিনি। আর প্রতি মুহূর্তে অন্যদের জন্য ভাল কিছু করাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চেয়েছেন।

সুকুমারন জানান, খবরের কাগজের প্রতিবেদন একবার এক দম্পতির কথা পড়েছিলেন। যাঁরা কিডনি দান করেছেন। সেই থেকে সুকুমারনও নিজের কিডনি দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ইচ্ছার কথা জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষতে চিঠিও লেখেন। কিন্তু একজন বন্দি কি এভাবে কিডনি দান করতে পারেন? এমন কোনও আইন নেই বলেই প্রত্যুত্তরে সুকুমারনকে জানান জেল কর্তৃপক্ষ। এতে অবশ্য হাল ছাড়েননি তিনি।তৎকালীন কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি লেখেন।পাশাপাশি কেরল হাইকোর্টে সাজা কমানোর মামলা শুরু করেন। যাতে মুক্ত হয়ে অন্তত ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন।

আরও পড়ুন: বিদেশেও নীরব খেল! নকল হিরের আংটি উপহার দেওয়ায় বিয়ে ভাঙল যুগলের

২০১৭ সালে জেল থেকে মুক্ত হন তিনি।জেল থেকে বেরনোর পর সুকুমারন সাথী মেডিক্যাল ইনফরমেশন সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেই কিডনির সমস্যায় ভোগা এক ২১ বছরের যুবকের খোঁজ পান তিনি। ওই মেডিক্যাল সেন্টারের মাধ্যমে নিজের কিডনি ওই যুবককে দান করেন সুকুমারন।

এর মাঝে নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। জেলে থাকাকালীন আর এক বন্দির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল তাঁর। সুকুমারনের আগে সেও ছাড়া পেয়েছিল। এরপর সেই বন্দির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী জানান, সেই বন্ধু কয়েকদিন আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। আর তিনিও খুবই অসুস্থ। অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এ সব জেনে আর নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি সুকুমারন। কিডনি বিক্রির টাকায় বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসা করান তিনি। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ওই মহিলা। তারপর থেকে দু’জনে পাত্তাম্বির একটি ভাড়া বাড়িতে একসঙ্গেই রয়েছেন। ওই মহিলার চার বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা বিয়েও করবেন বলে জানান সুকুমারন। বর্তমানে পাত্তাম্বিতে লটারির টিকিট বিক্রি করে দিন গুজরান করেন তিনি।

Crime Murder Organ donation খুন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy