সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তির জেরেই খুন। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ। সেখান থেকে বিয়ে, সংসার। সেই সোশ্যাল মিডিয়াই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়াল এক দম্পতির জীবনে। সারা ক্ষণ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে মশগুল থাকায় স্ত্রীকে খুন করল স্বামী। তিন মাসের পুত্রসন্তানও তার রোষ থেকে নিস্তার পেল না। ছোট্ট শিশুটিকেও শ্বাসরোধ করে খুন করল সে।
বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলার বিদাদি শহর, গত ২০ জানুয়ারি এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে বিষয়টি সামনে এসেছে সম্প্রতি। রামনগর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে গুদামকর্মী এসকে রাজুর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ ২৫ বছরের সুষমার। বন্ধুত্ব থেকে ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বাড়ে দু’জনের মধ্যে। বিয়ের আগে সুষমা অন্ত্বঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরিবারের সম্মতিতে ছ’মাস আগে বিয়ে হয় তাঁদের। তিন মাস আগে ফুটফুটে ছেলের জন্ম দেন সুষমা।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি সুষমার আসক্তি ঘিরে সম্প্রতি মনোমালিন্য শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। রান্নাবান্না এবং ঘরের অন্য কাজকর্ম ফেলে রেখে সারা ক্ষণ স্মার্টফোনে ব্যস্ত থাকায় সুষমাকে সন্দেহ করতে শুরু করে রাজু। অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগও তোলে। সেই নিয়ে অশান্তি চরমে পৌঁছলে প্রথমে পাথর দিয়ে থেঁতলে স্ত্রীকে খুন করে সে। তার পর গলা টিপে মেরে ফেলে ছোট্ট শিশুটিকেও।
আরও পড়ুন: ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ, মোদী জমানায় আকাশচুম্বী বেকারত্বের মুখোমুখি ভারত, বলল রিপোর্ট
আরও পড়ুন: পাসওয়ার্ড ছাড়াই সার্ভারে এসবিআই-এর তথ্য! গ্রাহকদের তথ্যভাণ্ডার ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা
খুনের পর নির্বিকারই ছিল রাজু। কিন্তু মেয়ে ও নাতির খবর না পেয়ে সন্দেহ জাগে সুষমার মায়ের। ২৬ জানুয়ারি মদনায়েকানাহাল্লি থানায় হাজির হন তিনি। মেয়ে ও নাতি নিখোঁজ বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই রাজুকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলে অপরাধ কবুল করে সে। জানায়, স্ত্রীর আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাই ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বেড়ানোর অছিলায় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে বেরোয়। মোটরবাইকে চড়ে হেজ্জাল-মুট্টুরায়ানপুর রোড সংলগ্ন কুম্বলগড়ু জঙ্গল এলাকায় হাজির হয়। সেখানে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে সুষমাকে খুন করে সে। প্রমাণ লোপাট করতে পেট্রল ঢেলে মৃতদেহ জ্বালিয়ে দেয়। তার পর গলা টিপে ছেলেকে খুন করে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।
গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত রামনগর থানার পুলিশ। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘আগে কখনও এমন ঘটনার কথা শুনিনি। সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের জীবনে কতখানি প্রভাব ফেলে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডই তার উদাহরণ। ফেসবুকেই রাজুর সঙ্গে আলাপ সুষমার। আর সোশ্যাল মিডিয়াই প্রাণ কেড়ে নিল তাঁর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy