Advertisement
E-Paper

‘বাবা’র কাছে এসে বৌ হারালেন কমলেশ

৭ সেপ্টেম্বর ফের শুনানি মামলার। তার আগে আদালত গুরমিতকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করায় কিছুটা বল পাচ্ছেন নিরাপদ স্থানে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা কমলেশ। আশা, গুরমিতের শাস্তি হলে মুক্তি পাবেন গুড্ডি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩৪
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

বেবাক চুরি হয়ে গেল বৌটা!

২০১৫ সালের ঘটনা। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে গিয়েছিলেন গুরু-সাক্ষাতে। সংসারে নিত্য অভাব-অভিযোগ, অশান্তি। যদি গুরুর আশীর্বাদে গ্রহের ফের কাটে— সেই আশাতেই রাজস্থানের জয়পুর থেকে হরিয়ানার সিরসায় পাড়ি দিয়েছিলেন দিনমজুর কমলেশ রাইগর ও স্ত্রী গুড্ডি দেবী। কী ভাগ্যি! পেয়েছিলেন গুরু গুরমিত রাম রহিমের সাক্ষাৎও। ২৪ থেকে ২৮ মার্চ ডেরা সচ্চা সৌদার সদর দফতরের আশ্রমে থেকে ভেবেছিলেন, ‘দর্শন’ যখন হল, এ বার ফিরে আসবেন জয়পুরে। কিন্তু ২৮ তারিখ সকালে ভিতর থেকে ডাক পড়ে গুড্ডির। এক ‘সেবকদার’ এসে কমলেশকে বলে, ‘‘ডেরা প্রমুখের সেবা আছে। তোমার বৌ তাতে স্থান পেয়েছে। সে ভাগ্যবতী।’’ কমলেশ যেতে দেন স্ত্রীকে। ভেবেছিলেন, ভালই হল। গুরুর নজরে কপাল ফিরবে।

আসলে কপাল পুড়েছিল। দু’দিন পরেও গুড্ডি না ফেরায় কমলেশ খোঁজ নিতে যান ডেরার আধিকারিকদের কাছে। তাঁকে বলা হয়, ‘‘বৌ ভাল আছে। তুমি এখন বাড়ি যাও। ঠিক সময়ে গুড্ডি ফিরে যাবে।’’ কমলেশ যান সিরসা থানায়। সেখানে বলা হয়, ‘‘যেখান থেকে এসেছ, সেখানেও অভিযোগ করো।’’ চার ও ছয় বছরের ছেলের হাত ধরে রাজস্থানে ফেরেন কমলেশ। জয়পুরের জহওর সার্কল থানায় ডেরা ও তার প্রধান গুরমিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, গুড্ডিকে ওই আশ্রমে সেবাদাসী করে রাখা হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

আরও পড়ুন:
শক্ত হাতে রাশ ধরে সফল ক্যাপ্টেন

তোপের পরে হিংসা নিয়ে সরব প্রধানমন্ত্রী

শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু তদন্তকারী অফিসারদেরই গা-ছাড়া মনোভাব দেখে আদালতের দ্বারস্থ হন কমলেশ। তাঁর আইনজীবী বাবুলাল বৈরোয়া বলেন, ‘‘প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত হাল্কা করার চেষ্টা করছিল ডেরা। ২০১৫-র ২১ মে আদালতে শুনানির দু’দিন আগে কমলেশকে অপহরণ করে ডেরা-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কমলেশকে আদালতে নিয়ে গিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আমি ওই দিন কমলেশকে আদালতে দেখতে পেয়ে দলবল নিয়ে ছাড়িয়ে আনি।’’ তার পরেও একাধিক বার সিরসার ডেরা সদরে স্ত্রীর খোঁজে গিয়েছিলেন কমলেশ। প্রতি বার তাঁকে বলা হয়েছে, স্ত্রী সমাধিতে রয়েছেন। ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরবেন।

৭ সেপ্টেম্বর ফের শুনানি মামলার। তার আগে আদালত গুরমিতকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করায় কিছুটা বল পাচ্ছেন নিরাপদ স্থানে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা কমলেশ। আশা, গুরমিতের শাস্তি হলে মুক্তি পাবেন গুড্ডি। কিন্তু কমলেশের ঘনিষ্ঠরা ততটা আশাবাদী নন। বাবুলালের আশঙ্কা, ‘‘মেয়ে পাচার থেকে অঙ্গ বিক্রি— সব দুষ্কর্মই হয় সিরসাতে।’’

আজই গুরমিতের প্রাক্তন গাড়িচালক খট্টা সিংহের বছর দশেক আগেকার একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করেছে একটি চ্যানেল। সিবিআইয়ের অন্যতম সাক্ষী খট্টা তাতে অভিযোগ করেছেন, নিজের পার্শ্বচর রঞ্জিৎ সিংহের বোনকে ধর্ষণ করেছিলেন গুরমিত। সূত্রের দাবি, সেই সাধ্বীই গোটা ঘটনা জানিয়ে চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রীকে। তদন্তে নামে সিবিআই।

কিন্তু কমলেশের কী হবে? আগামী কাল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের উপরেই যাবতীয় আশা-ভরসা তাঁর। যদি ফিরে পান মানুষটাকে।

Gurmeet Ram Rahim Missing FIR Haryana
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy