বন্ধু: জারাটোলি গ্রামে মঙ্গেশ। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের বাইরে খোলা জায়গায় বসে বছর তিরিশের যুবক। তাঁকে ঘিরে গ্রামের মেয়েরা। ওই যুবক বোঝাচ্ছেন, ঋতুকালীন সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রয়োজনীয়তার কথা। যুবকের কয়েক জন সঙ্গী ন্যাপকিন বিলিও করছেন।
দৃশ্যটা যতটা সহজ বলে মনে হচ্ছে, পথটা মোটেই ততটা মসৃণ ছিল না। এক জন অচেনা পুরুষের পক্ষে এমন বিষয়ে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলা খুব ‘স্বাভাবিক’ ঘটনা নয়। সেই অসাধ্যই করেছেন রাঁচীর যুবক মঙ্গেশ ঝা। অনেকটা কোয়ম্বত্তূরের অরুণাচলম মুরুগনন্তমের মতো। ‘প্যাডম্যান’ বলে পরিচিত অরুণাচলম এই ধরনের সচেতনতা চালিয়ে আসছেন বহু দিন। তৈরি করেছেন সস্তার ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। জোনহা ফলসের কাছে জঙ্গল ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম জারাটোলিতেও চলছে সেই সচেতনতার পাঠ।
রাঁচীর কোঁকরের বাসিন্দা মঙ্গেশ বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত। দিল্লির রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে জড়িত যুবক বেশির ভাগ সময় রাঁচীতে থাকেন। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ মঙ্গেশ বলেন, ‘‘শুরু করি একা। এখন আর একা নই।’’ জারাটোলি, রাসাবেরা, মুনান্ডির গ্রামের মেয়েদের নিয়ে তাঁর কাজ। মঙ্গেশ জানান, এক সময় হোটেলেও কাজ করেছেন। পর্যটকদের নিয়ে জোনহা ফলস দেখাতে গিয়ে চোখে পড়ে জারাটোলি গ্রামে দুর্দশার ছবি। মঙ্গেশ বলেন, ‘‘ফের ওই গ্রামে আসি। মুখিয়া জানান, ন্যাপকিন ব্যবহার না করায় গ্রামের মেয়েদের বেশিরভাগই ঋতুকালীন নানা অসুখে ভোগেন।’’
মহেশ ফিরে ঠিক করেন, এই নিয়ে কাজ করবেন। কিন্তু তাঁর মতো অচেনা পুরুষের সঙ্গে হঠাৎ এই নিয়ে কেউ কথা বলবে কেন? প্রশ্নটা এসেছিল মনে। তাই গ্রামে ঘুরে এক মহিলাকে বেছে নেন, যিনি বাকিদের সঙ্গে কথা বলবেন। মঙ্গেশ বলেন, ‘‘জারাটোলি গ্রামে যেমন ধর্মী কুমারী কাজ শুরু করেন।’’ মঙ্গেশের মা পুষ্পলতা ঝা-ও এই কর্মকাণ্ডে জড়িত। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে সেলাই মেশিনে ন্যাপকিন তৈরি করে দিয়েছি।’’ অনেকে ব্যক্তিগত সাহায্যও করেছেন। তবে মঙ্গেশ চান, গ্রামের মেয়েরাও নিজে হাতে ন্যাপকিন তৈরি করতে শিখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy