মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের ভিড়ে হাঁসফাঁস দশা উত্তরপ্রদেশের রাজধানী প্রয়াগরাজের। একের পর এক গাড়ি প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে। যানজটের কারণে ১৫ মিনিটের রাস্তা পেরোতে সময় লেগে যাচ্ছে প্রায় তিন ঘণ্টা! শহরে প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। থমকে যান চলাচল। শনিবার নয়াদিল্লি স্টেশনে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পর সকাল থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। এখনও কাতারে কাতারে মানুষ কুম্ভমেলার দিকে যাচ্ছেন। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গত মাসে কুম্ভমেলা শুরু হয়েছিল। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটির বেশি মানুষ এই মেলায় যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়াগরাজে গিয়েছেন, বলছে পরিসংখ্যান। ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুম্ভমেলা চলার কথা ছিল। পুণ্যার্থীদের ভিড়ের কারণে আরও দু’দিনের জন্য তার সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এ বারের কুম্ভমেলা শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। মূলত তিনটি তিথিতে ত্রিবেণিসঙ্গমে পুণ্যস্নানের হিড়িক দেখা যায়। মকর সংক্রান্তি, মৌনী অমাবস্যা এবং বসন্ত পঞ্চমী। তিন তিথিই অতিক্রান্ত। তার পরেও প্রয়াগরাজে কেন এত ভিড়, অনেকেই ভেবে পাচ্ছেন না। এখনও বহু মানুষ পুণ্যার্জনের লোভে সেখানে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
রবিবার সকালে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্টেশন তো বটেই, বিহারের একাধিক স্টেশনেও বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই সমস্ত স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজের ট্রেন ধরার জন্য জড়ো হন পুণ্যার্থীরা। নয়াদিল্লির মতো ঘটনা যাতে আর না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতে চায় প্রশাসন। তবে রবিবার সকালেও নয়াদিল্লি স্টেশনের ছবি খুব একটা বদলায়নি। অভিযোগ, সকাল থেকে সেখানে একই রকম ভাবে ভিড় করেছেন মানুষ। প্রয়াগরাজের ট্রেনে খুব ভিড় হচ্ছে। ভিড় ট্রেনের জানলা দিয়ে এক বৃদ্ধাকে ভিতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। তার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
গত সপ্তাহেও মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের ভিড়ে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রয়াগরাজের ট্র্যাফিক। ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছিল। এমনকি অভিযোগ, ৪৮ ঘণ্টা ধরে রাস্তাতেই কাটাতে হয়েছে অনেককে। রবিবারও যানজটের ছবিটা অনেকটা একরকম।
শনিবার নয়াদিল্লি স্টেশনে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। তাঁরা সকলেই কুম্ভের পুণ্যার্থী। নয়াদিল্লি থেকে প্রয়াগরাজের ট্রেন ধরতে চেয়েছিলেন। এই ঘটনার পর উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকমিটি গঠন করেছে রেল। মৃতদের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করা হয়েছে।