খোদ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জঙ্গি যোগাযোগের অভিযোগ তুলে চার্জশিট জমা দিল মেঘালয় পুলিশ। শুধু যোগাযোগ রাখাই নয়, পুলিশের দাবি: গারো জঙ্গি সংগঠন জিএনএলএ-র সক্রিয় সাহায্য নিয়েই ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে জিতেছেন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেবোরা সি মারাক। মারাক অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে চক্রান্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন। দেবোরা শুধু মন্ত্রী নন, মেঘালয় প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতিও। উইলিয়াম নগর ব্লক যুব কংগ্রেসের সভাপতি টেনিডার্ড মারাকের বিরুদ্ধেও জঙ্গি যোগের অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই জিএনএলএর সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ রয়েছে। খোদ জিএনএলএর প্রাক্তন নেতা মুখ্যমন্ত্রী ও জিএনএলএর মধ্যে যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছেও অভিযোগ জমা পড়ে। এ বার তাঁরই মন্ত্রীসভার অন্যতম সদস্য দেবোরার বিরুদ্ধে পুলিশ সরাসরি জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে ভোটে জেতার অভিযোগ আনায় বিরোধীরা ফের শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে।
পূর্ব গারো হিলের এসপি ডেভিস আর মারাক জানান, “বিধানসভা ভোটে লড়া উইলিয়াম নগরের নির্দল প্রার্থী জোনাথন এন সাংমা গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দেবোরার বিরুদ্ধে জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে ভোটে জেতার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত চালিয়ে জানা যায়, দেবোরার হয়ে জঙ্গিরা গ্রামে-গ্রামে নির্দেশ জারি করে, ‘দেবোরাকে ভোট না দিলে গুলি খেতে হবে।’ দেবোরাকে ভোট দিতে বলে উইলিয়াম নগরে গারো ভাষায় পোস্টারও লাগায় জঙ্গিরা। তাতে লেখা ছিল, যে বা যারা জোনাথনকে ভোট দেবে তাদের জন্য এই থাকল বন্দুক আর থাকল বুলেট।’’ দেবোরা ও টেনিডার্ড প্রচারের সময়ও জিএনএলএর লেখা সেই পোস্টার ও ব্যানার দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছেন বলে পুলিশ সুপারের দাবি। প্রচারসভায় জোনাথনকে আক্রমনও করা হয়েছিল। শেষ অবধি দেবোরা প্রায় ২০০০ ভোটে জেতেন। তদন্তে জানা যায়, টেনিডার্ডও দেবোরার হয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছিলেন। এসপির বক্তব্য, “তদন্তে জানা গিয়েছে, গারোদের জন্য পৃথক গারোল্যান্ড গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেবোরা-টেনিডার্ডরা জঙ্গিদের হাত করেছিলেন। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। পুলিশ উইলিয়াম নগরের সিজেএম আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। এই চক্রান্তে জড়িত জিএনএলএর কম্যান্ডার পর্যায়ের কয়েকজন নেতার নামও পুলিশ পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও পৃথক চার্জশিট দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, চার্জশিটে নাম থাকা এই টেনিডার্ডই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভুয়ো উপজাতি শংসাপত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই মামলা আপাতত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কংগ্রেসের একাংশ ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধও পাচ্ছে। টেনিডার্ডের আইনজীবীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্যই টেনিডার্ডকে ফাঁসানো হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy