Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অস্ত্র কেনার টাকা কই, সেনার প্রশ্নে প্যাঁচে কেন্দ্র

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের এলাকায় ঢুকে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-কে উত্তরপ্রদেশের ভোটে রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছিলেন মোদী-অমিত শাহ। সেই সেনাই এ বার তোপ দাগায় অস্বস্তিতে পড়েছে সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৬
Share: Save:

মোদী সরকার বাজেটে যে টাকা বরাদ্দ করেছে, তাতে জরুরি যুদ্ধাস্ত্র কেনার টাকা মেটাতে পারছে না ভারতীয় সেনা, অস্ত্রশস্ত্রের আধুনিকীকরণ তো দূরের কথা। সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তাই গিয়ে খোলাখুলি অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন সংসদীয় কমিটির কাছে। সেনা উপপ্রধান লেফটেনান্ট জেনারেল শরথ চাঁদের অভিযোগ, চিন সীমান্তে রণকৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তৈরির যথেষ্ট অর্থও নেই তাঁদের কাছে।

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের এলাকায় ঢুকে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-কে উত্তরপ্রদেশের ভোটে রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছিলেন মোদী-অমিত শাহ। সেই সেনাই এ বার তোপ দাগায় অস্বস্তিতে পড়েছে সরকার। এ হেন অভিযোগ বিরলতম বলেও মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি নেতা, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বি সি খান্ডুরি। তাঁর রিপোর্টেই উঠে এসেছে সেনার ১৯ পৃষ্ঠার অভিযোগ।

মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ধুয়ো তুলে বিদেশ থেকে যুদ্ধাস্ত্র না কিনে এ দেশেই তা তৈরির কথা বলেছিলেন। সেই বেলুন চুপসে দিয়ে সেনার যুক্তি, ২৫টি প্রকল্প চিহ্নিত হলেও যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ হয়নি। অধিকাংশ প্রকল্প শুরুর আগেই বন্ধ করে দিতে হবে।

কেন্দ্রের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছেন খোদ সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। তাঁর যুক্তি, ‘‘প্রতিরক্ষায় খরচা থেকে কিছু লাভ মেলে না, এই মিথটা ভাঙতে চাই। ৩৫ শতাংশ বাজেট রাষ্ট্র নির্মাণের কাজেই যায়। সীমান্তবর্তী এলাকার পরিকাঠামো উন্নতি হলে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ সুবিধা পান।’’ এই যুক্তির পরে বাঁধা গতে ‘সেনাবাহিনী সব সময়ই বেশি টাকা চায়’ বলতে হোঁচট খাচ্ছে মন্ত্রক।

সেনা সূত্রের যুক্তি, উরি হামলার পরে সেনা জরুরি ভিত্তিতে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, গোলাবারুদ, রাইফেল কিনেছিল। ডোকলাম সংঘাতের পরেও সামরিক সরঞ্জাম কেনা হয়। কিন্তু সংসদীয় কমিটিকে সেনা উপপ্রধান জানান, আধুনিকীকরণের জন্য বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ২১,৩৩৮ কোটি টাকা। অথচ এখনই ২৯,০৩৩ কোটি টাকা খরচে সেনা দায়বদ্ধ। ৬৮ শতাংশ যুদ্ধাস্ত্র ‘ভিন্টেজ’ শ্রেণিতে পৌঁছে গিয়েছে। সেনার হিসেব মতো, প্রয়োজনের তুলনায় তাঁরা প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা কম পেয়েছেন। চিন ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিকাঠামো তৈরির প্রয়োজনেও ৯০২ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE