দিল্লির রুশ দূতাবাসের কূটনীতিক আর্থার গার্বস্টের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে রাশিয়াকে ‘নোট ভার্বাল’ বা লিখিত অনুরোধ জানাল বিদেশ মন্ত্রক। রুশ দূতাবাসের কনসুলার ডিভিশনের প্রধান আর্থারের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, তিনি চন্দননগরের বাঙালি পরিবারের রুশ বৌমা ভিক্টোরিয়া জিগালিনা বসুকে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে মস্কোয় পালিয়ে যেতেসাহায্য করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাঁচ বছরের শিশুপুত্র তার বাবা সৈকত বসু ও মায়ের কাছে ভাগাভাগি করে থাকত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ভিক্টোরিয়া পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে জুলাই মাসে বিদেশে পালিয়ে যান। অথচ সৈকত ও ভিক্টোরিয়ার ছেলের ভারতীয় পাসপোর্ট সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক আইনি সাহায্য চুক্তি মেনে রাশিয়ার সাহায্য চাইতে মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসকে অনুরোধ করেছিল। যাতে মস্কোয় ভিক্টোরিয়া ও তাঁর ছেলেকে খোঁজ করা যায়। একই সঙ্গে রুশ কূটনীতিকের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের জন্যও অনুরোধ জানানো হয়। মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের তরফে রাশিয়ার প্রসিকিউটর জেনারেলের দফতরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ বলেছে, কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকলেও কেউ দেশের আইন ভেঙে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ বা হেফাজতে নিয়ে জেরা করা যেতে পারে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট নিজে এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ জারি না করে পুলিশ ও সরকারের উপরে বিষয়টি ছেড়ে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে কূটনীতিকদের নিজস্ব যোগাযোগ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ১০ দিন পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে।
চন্দননগরের সৈকত বসুর সঙ্গে রাশিয়ার ভিক্টোরিয়া জ়িগালিনার বিয়ের পরে সৈকতের পরিবার জানতে পেরেছিল, ভিক্টোরিয়ার বাবা রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা এসএসবি-র অবসরপ্রাপ্ত গুপ্তচর। বিয়ের পরে ভিক্টোরিয়া সৈকতের বাবা, প্রাক্তন ফৌজি অফিসারকে কলকাতায় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়ায় পরিবারের সন্দেহ হয়েছিল, ভিক্টোরিয়া নিজেও রুশ গুপ্তচর। সৈকত-ভিক্টোরিয়ার বিবাদের মামলা সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয়। গত ৭ জুলাই ভিক্টোরিয়া ছেলেকে নিয়ে উধাও হয়ে যান।
দিল্লি পুলিশ সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, আর্থারের ভাড়া করে দেওয়া ট্যাক্সি চেপে ভিক্টোরিয়া পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে দিল্লি থেকে বিহারের নারকাটিয়াগঞ্জে পৌঁছে, ভারত-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে কাঠমান্ডু চলে যান। সেখান থেকে বিমানে শারজায় হয়ে মস্কো চলে যান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)