Advertisement
০১ মে ২০২৪

ভর্তুকির অঙ্ক এ বার টিকিটে ছাপতে চায় রেল মন্ত্রক

যাত্রী পরিবহণের খরচের তুলনায় টিকিটের দাম যে নস্যি, এ বার ফলাও করে তা জানাতে চায় রেল মন্ত্রক। কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে যাত্রীদের দেখাতে চায় তাঁদের পিছনে গোনা ভর্তুকির অঙ্ক।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৮:২৯
Share: Save:

যাত্রী পরিবহণের খরচের তুলনায় টিকিটের দাম যে নস্যি, এ বার ফলাও করে তা জানাতে চায় রেল মন্ত্রক। কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে যাত্রীদের দেখাতে চায় তাঁদের পিছনে গোনা ভর্তুকির অঙ্ক। আর সেই কারণে এ বার টিকিটেই সেই টাকার পরিমাণ ছাপাতে চায় তারা। যা দেখে রেলের অন্দরে জল্পনা, তবে কি ভর্তুকির বোঝা কমাতে ভাড়া বাড়ানোর কথা ভাবছেন মন্ত্রী সুরেশ প্রভু?

রেল সূত্রের খবর, এ বিষয়ে মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লোকাল ট্রেনে যাত্রী-পিছু ভর্তুকি ৬৪%। আর দূরপাল্লার ট্রেনে ৪৩%। রেলের দাবি, যাত্রী পরিবহণে ভর্তুকি গুনতে হচ্ছে বছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা। যা সামাল দিতে হচ্ছে পণ্য মাসুল থেকে। মন্ত্রক সূত্রে খবর, এ বার ভর্তুকির বিপুল অঙ্কই ছাপা হবে রেল টিকিটে। যাতে যাত্রীরা তা জানতে পারেন।

কিন্তু হঠাৎ রেল টিকিটে ভর্তুকি ছাপার পরিকল্পনা কেন?

অনেকে বলছেন, এই পথে হেঁটে আসলে রেলে ভর্তুকি ছাঁটাই করতে চান প্রভু। খুলতে চান টিকিটের দাম বাড়ানোর মতো রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল পদক্ষেপের দরজা। তাঁদের যুক্তি, প্রথমে বছর খানেক ধরে রান্নার গ্যাসে স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ছাড়া নিয়ে প্রচার চালিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু পরে বছরে দশ লক্ষের উপর আয়ে বন্ধ করা হয় সেই ভর্তুকি। রেল কর্তাদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, টিকিটে ভর্তুকি ছাপানোর সিদ্ধান্তও আসলে তা ছাঁটাইয়ের পথ প্রশস্ত করার প্রচার। এক অর্থে তা ভাড়া বৃদ্ধির ইঙ্গিত।

তবে এই ভর্তুকি বা সেই সূত্রে ক্ষতির অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রেল কর্তাদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, সরকারি হিসাবের পদ্ধতিতে লাভ-লোকসানের অঙ্ক কষা সহজ নয়। তার জন্য প্রয়োজন বাণিজ্যিক হিসেব। তা ছাড়া, যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের পরিকাঠামোর বেশির ভাগটা একই। ফলে চালু পদ্ধতিতে আলাদা ভাবে বোঝা কার্যত অসম্ভব যে, কোন খাতে খরচ কত। তাই তাঁদের মতে, যতক্ষণ রেলের হিসেব-পদ্ধতি না বদলায়, তত ক্ষণ নির্দিষ্ট করে লোকসানের অঙ্ক বলা শক্ত।

রেল কর্তারা জানাচ্ছেন, রেলের হিসাব-পদ্ধতিকে বদলানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনেক আগেই তৈরি হয়েছে ‘অ্যাকাউন্টস রির্ফম কমিটি’। তারা এখনও রিপোর্ট পেশ করেনি। ফলে তার আগে ভর্তুকির অঙ্ক ফলাও করে প্রচারের কোনও মানে খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা।

প্রাক্তন রেল কর্তাদের মতে, রেলের বরং উচিত খরচ কমাতে তারা কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেগুলি আরও বেশি করে প্রচার করা। খতিয়ে nদেখা ফি-বছর যাত্রী কমার কারণ। তা না করে শুধু ভর্তুকির বিষয়টি তুলে ধরে কোনও লাভ হবে না বলেই তাঁদের ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ministry of Railways subsidies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE