E-Paper

হিজাব পরার অনুমতি দিতে খুলল স্কুল, ক্ষুব্ধ গির্জা, বিতর্কে মন্ত্রী

সোমবার পাল্লুরুথির সেন্ট রিটা’স পাবলিক স্কুলে হিজাব পরে ঢুকতে নিষেধ করা হয় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেরলের কোচির একটি গির্জা-পরিচালিত স্কুলে এক মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরে স্কুলে আসতে নিষেধ করার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গত সোমবারের এই ঘটনায় পরিস্থিতি এতটাই জোরালো হয় যে দু’দিনের জন্য স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়। অষ্টম শ্রেণির ওই মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া পরে আজ স্কুল খোলে। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টির দফতর থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মুসলিম ছাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সেটা মাথায় রেখে তাদের স্কুলে হিজাব পরে আসার অনুমতি দেওয়া হোক। মন্ত্রীর ঘোষণায় ক্ষুব্ধ কেরলের গির্জাগুলিকে তৈরি সংগঠন।

সোমবার পাল্লুরুথির সেন্ট রিটা’স পাবলিক স্কুলে হিজাব পরে ঢুকতে নিষেধ করা হয় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। সে নিয়ে স্কুলে বিস্তর ঝামেলা হলেও খবর বাইরে আসে সমাজমাধ্যম মারফত। স্কুলের অধ্যক্ষ সিস্টার হেলেনা আরসি একটি চিঠি দিয়ে জানান, সোম ও মঙ্গলবার স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে। ওই চিঠিটি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘এক ছাত্রী স্কুলের অনুমোদিত ইউনিফর্ম না পরার জন্য তাকে ঢুকতে না দেওয়ায় তার মা-বাবা ও আত্মীয়-পরিজন সকুলে এসে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্ট করেছেন। এই পরিস্থিততে অন্য পড়ুয়ারা ও স্কুল-কর্মীরা স্কুলে আসতে চাইছেন না। তাঁরা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাই অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন (পিটিএ)-এর সঙ্গে আলোচনা করে ১৩ ও ১৪ অক্টোবর স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে।’ পিটিএ-র এক সদস্য জানান, গত ৩০ বছর ধরে একই পোশাকবিধি রয়েছে স্কুলে। সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা সেই বিধি মেনে চলে। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন পড়ুয়ার বাবা-মা হিজাব পরে পাঠাতে চেয়েছেন তাঁদের মেয়েকে। তাতে স্কুল আপত্তি প্রকাশ করায় তাঁরা লোকজন স্কুলে নিয়ে এসে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। এতটাই যে পড়ুয়ারা ভয় পাচ্ছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।’’

ওই পড়ুয়ারা বাবার বক্তব্য, স্কুল বলছে হিজাব পরলে ক্লাসে সাম্য থাকবে না। এক দিন ক্লাস চলাকালীন তাঁর মেয়ের হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয়েছিল। এর পর থেকে স্কুলের গেটেই আটকে দেওয়া হত। ওই পড়ুয়ার বাবা জানান, তিনি জেলা শিক্ষা আধিকারিকের দফতরেও লিখিত অভিযোগ জানান।

আজ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তিনি নির্দেশ দেন, মেয়েটিকে যেন হিজাব পরে ক্লাস করতে দেওয়া হয়। তিনি জানান, সংবিধানে পড়ুয়াদের অধিকার বলা রয়েছে। দেশের ও রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত আইন তাদের সুরক্ষায় কাজ করবে। এর্নাকুলামের শিক্ষা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরও একটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে বহু ক্ষেত্রে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে স্কুল করতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্লাসে হিজাব পরতে না দেওয়া শিক্ষার অধিকার আইন ভঙ্গ করার মতো গুরুতর অপরাধ।

কেরলের ল্যাটিন ক্যাথোলিক গির্জাগুলির সংগঠনের অবশ্য দাবি, শিক্ষামন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়’ এবং ‘তাঁর নিজস্ব লাভক্ষতির কথা মাথায়’ রেখে নেওয়া সিদ্ধান্ত।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Hijab Kochi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy