Advertisement
E-Paper

আজ ব্রডগেজে মিজোরাম,মণিপুর

ব্রডগেজে ভারতের অন্য প্রান্তের সঙ্গে জুড়ছে উত্তর-পূর্বের আরও দুই রাজ্য। মিজোরামের ভৈরবী ও মণিপুরের জিরিবাম থেকে আগামী কাল বিকেল ৩টেয় দু’টি ট্রেন রওনা দেবে। গন্তব্যস্থল শিলচর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিলঙে বসে ‘রিমোট কন্ট্রোলে’ বোতাম টিপে যাত্রা শুরুর সঙ্কেত দেবেন ট্রেন দু’টির। তাঁর সঙ্গে থাকবেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৩:৩৫
মুখোমুখি। অরুণাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুলের সঙ্গে বৈঠক সর্বানন্দ সোনোয়ালের। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। ছবি: পিটিআই ।

মুখোমুখি। অরুণাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুলের সঙ্গে বৈঠক সর্বানন্দ সোনোয়ালের। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। ছবি: পিটিআই ।

ব্রডগেজে ভারতের অন্য প্রান্তের সঙ্গে জুড়ছে উত্তর-পূর্বের আরও দুই রাজ্য। মিজোরামের ভৈরবী ও মণিপুরের জিরিবাম থেকে আগামী কাল বিকেল ৩টেয় দু’টি ট্রেন রওনা দেবে। গন্তব্যস্থল শিলচর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিলঙে বসে ‘রিমোট কন্ট্রোলে’ বোতাম টিপে যাত্রা শুরুর সঙ্কেত দেবেন ট্রেন দু’টির। তাঁর সঙ্গে থাকবেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।

উত্তর-পূর্ব পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী আগামী কালই শিলঙে পৌঁছবেন। আগে কথা ছিল, একসঙ্গে তিন রাজ্যকে ব্রডগেজ ‘নেটওয়ার্কে’ আনা হবে। মূল আকর্ষণ থাকবে ত্রিপুরায়। আগরতলা থেকে একই সময়ে চারটি ট্রেন শিলচর, শিয়ালদহ, জিরিবাম ও ভৈরবীর দিকে ছাড়া হবে। আগরতলা-জিরিবাম ট্রেনটি শিলচর না গিয়ে অরুণাচল স্টেশন থেকে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাবে। একই ভাবে আগরতলা-ভৈরবী ট্রেন কাটাখাল থেকে মিজোরামের দিকে বাঁক নেবে। সেইসঙ্গে ২ মে থেকে চলা আগরতলা-শিলচর যাত্রিবাহী ট্রেনটিরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

কিন্তু পাহাড় লাইনে সমস্যা থাকায় ত্রিপুরাকে বাদ দিয়েই উদ্বোধনে উদ্যোগী হয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। রেলকর্তাদের ইচ্ছা, বদরপুর-লামডিং অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হলে জাঁকজমক ভাবে আগরতলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করবেন। কারণ এর সঙ্গে একটা আন্তর্জাতিক বিষয়ও জড়িয়ে রয়েছে। একই দিনে শিলান্যাসের কথা আগরতলা (ভারত)-আখাউড়া (বাংলাদেশ) ব্রডগেজ প্রকল্পের।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিনিয়র পিআরও সুষেন ওঝা জানান, পাহাড় লাইনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। কিন্তু অত্যধিক বর্ষণের জন্য কোনওমতেই পুরো লাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলা যাচ্ছে না। তিনি আশাবাদী, কয়েক দিনেই বৃষ্টি কমবে। রেল লাইনও স্বাভাবিক চেহারা নেবে।

আগামী কালের অনুষ্ঠানের কথা জানিয়ে সুষেনবাবু জানান, শিলং থেকে প্রধানমন্ত্রী বোতাম টিপে উদ্বোধন করলেও ভৈরবী এবং জিরিবামেও দু’টি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ২টোয় শুরু হবে অনুষ্ঠান। সেখানে স্থানীয় সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন রেলের পদস্থ কর্তারা। একঘণ্টার অনুষ্ঠান শেষে মিজোরামের একমাত্র স্টেশন ভৈরবী থেকে ট্রেন রামনাথপুর, জামিরা, কাটলিছড়া, লালাবাজার, হাইলাকান্দি, কাঁটাখাল, অরুণাচল হয়ে রাত ৭টায় শিলচর পৌঁছবে। অন্য ট্রেনটি মণিপুরের জিরিবাম থেকে জিরিঘাট, কামরাঙা, শ্রীবার, মৈনারবন্দ, অরুণাচল হয়ে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছবে।

আগামী কাল আসলে প্রধানমন্ত্রী রিমোট কন্ট্রোলে তিনটি ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। অন্যটি কামাখ্যা-কাটরা এক্সপ্রেস। কামাখ্যা স্টেশন থেকে সেটি ছাড়া হবে। এর পর থেকে কামাখ্যা ও কাটরার মধ্যে ১ জুন থেকে সপ্তাহে একজোড়া ট্রেন নিয়মিত চলাচল করবে। শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী কাটরা থেকে রওনা হবে প্রতি বুধবার ভোর ৩টা ৪০ মিনিটে। কামাখ্যা থেকে ছাড়বে প্রতি রবিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

শিলচরের সঙ্গে ভৈরবী এবং জিরিবামের সংযোগকারী ট্রেন দু’টিরও নিয়মিত চলাচলের জন্য ভিন্ন সময় ঠিক করা রয়েছে। শিলচর থেকে জিরিবাম রওনা হবে প্রতি দিন সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। পৌঁছবে সকাল ১১টায়। ৪৫ মিনিট পর ওই ট্রেনটি জিরিবাম থেকে শিলচরের দিকে ছাড়বে। ভৈরবী থেকে নিয়মিত ট্রেন চলবে প্রতি দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায়। সেটি শিলচর পৌঁছবে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে। পরে বিকেল ৪টে ৪৫ মিনিটে শিলচর থেকে ভৈরবী রওনা দেবে।

দু’টি ট্রেনকেই স্বাগত জানাতে ওই সব অঞ্চলের মানুষ প্রস্তুত। গেজ পরিবর্তনের জন্য ট্রেনলাইন পুরো বন্ধ থাকায় অনেক দিন ধরে মানুষ ছিল দুর্ভোগে। আগামী কাল হাইলাকান্দিতে নানা অনুষ্ঠানে ব্রডগেজ বরণের আয়োজন করছে হাইলাকান্দি রেলযাত্রী সুরক্ষা সমিতি, হাইলাকান্দি নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি-সহ বিভিন্ন সংগঠন। আজই ব্লাড মাউথ ক্লাবে এ নিয়ে স্থানীয় নাগরিকদের বৈঠক হয়। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দফায় দফায় আন্দোলন করতে হয়েছে আমাদের। এ এক বিরাট পাওনা। একে স্মরণীয় করে রাখব আমরা।’’

পাহাড় লাইন দীর্ঘ দিন থেকে বন্ধ থাকায় দক্ষিণ অসম ও ত্রিপুরায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মানুষ জরুরি প্রয়োজনেও বাইরে যেতে পারছেন না। একে তো রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। বিমানের টিকিট দুর্মূল্য। এমন সময়ে মানুষ ট্রেন চলাচলের অপেক্ষায়।

কিন্তু প্রতি দিনই জানানো হচ্ছে, আরও দু’দিনের জন্য পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠনের অভিযোগ— লামডিং-শিলচর গেজ পরিবর্তন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও ওই একই চর্চা।

১৯৯৮-৯৯ সালে ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁটাখাল-ভৈরবী গেজ পরিবর্তন প্রকল্পের মঞ্জুরি মেলেছিল। এখন ভৈরবী থেকে সাইরাঙ পর্যন্ত লাইন টানার কাজ চলছে। এটি বাস্তবায়িত হলে মোট ৫৩ কিলোমিটার রেললাইন হবে মিজোরামে।

অরুণাচল (মাসিমপুর)-জিরিবাম গেজ পরিবর্তনের মঞ্জুরি মিলেছিল ২০০০-০১ সালে। এই রুটে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলার উপযোগী লাইন তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন রেলকর্তারা।

এই রাজ্যেও রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। রাজধানী ইম্ফল পর্যন্ত রেল চালানোই লক্ষ্যে এগোচ্ছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত ধলাখাল পর্যন্ত লাইন বসানো গিয়েছে। চলছে মালগাড়ি। পরে সেটিকে মোরে দিয়ে মায়ানমারে ঢোকানো হবে।

mizoram broadgauge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy