E-Paper

রাজ্যের অধিকার চেয়ে মোদীকে তোপ স্ট্যালিন-কারাটদের

অ-বিজেপি শাসিত সব রাজ্যের এক হয়ে রুখে দাঁড়ানোরই ডাকই উঠে এসেছে সেখানে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:১৫
সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আলোচনা-সভায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনকে সংবর্ধনা। ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী

সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আলোচনা-সভায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনকে সংবর্ধনা। ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট। মাদুরাইয়ে। নিজস্ব চিত্র।

ইতিহাসকে হাতিয়ার করে ভবিষ্যতের প্রশ্নে বিজেপিকে নিশানা। এই সুরেই মিলে গেল তামিলনাড়ুর ডিএমকে, কেরলের বাম এবং কংগ্রেসের কর্নাটক সরকারের স্বর।

সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা-সভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে একই অভিমুখে বৃহস্পতিবার তোপ দাগলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং কর্নাটকের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী এম সি সুধাকর। তাঁদের সম্মিলিত অভিযোগ, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আমলে যে ভাবে রাজ্যের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে, আর্থিক পাওনা আটকে দেওয়া হচ্ছে, স্বাধীনতার পরে কখনও তেমন হয়নি। অ-বিজেপি শাসিত সব রাজ্যের এক হয়ে রুখে দাঁড়ানোরই ডাকই উঠে এসেছে সেখানে।

মাদুরাইয়ের রাজা মুতাইয়া মন্দ্রমে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাই ভারতের শক্তি’ শার্ষক আলোচনায় স্ট্যালিন বলেছেন, ‘‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২০১২ সালে দাবি ছিল, সারকারিয়া এবং পুঞ্ছি কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে কেন্দ্রকে। মোদীকে প্রশ্ন করতে চাই, তিন তিন বার কেন্দ্রে সরকার হাতে পেয়ে এই ব্যাপারে আপনি কী করেছেন?’’ সম্প্রতি ‘এক দেশ, এক ভোট’ তো বটেই, নতুন সীমানা পুনর্বিন্যাসের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন স্ট্যালিন। সেই অবস্থানেই আরও শাণ দিয়ে ডিএমকে নেতার মন্তব্য, ‘‘এক দেশ, এক ভাষা, এক ধর্ম, এক ভোট! এটাই ওদের (বিজেপি)লক্ষ্য। এর বিরুদ্ধে আমাদের একজোট হতে হবে।’’ কেরলের বিজয়নের অভিযোগ, রাজ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও তাদের বঞ্চনা করে চলেছে কেন্দ্র।

‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির বিরোধিতায় এবং যুক্তিসঙ্গত সীমানা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে পার্টি কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে প্রস্তাব পাশ করেছে সিপিএম। লাগাতার আক্রমণের মুখে কেরলের এলডিএফ সরকারকে ‘রক্ষা’ করার ডাক দিয়ে প্রস্তাব পেশ করেছেন বাংলার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আর আলোচনা-সভায় এই সব কিছুকেই এক সূত্রে গেঁথে সিপিএমের পলিটব্যুরো কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট বলেছেন, ‘‘আমাদের সংবিধানের অন্যতম ভিত্তি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অ-বিজেপি শাসিত সব সরকারকে লড়াই করতে হবে। গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায় আস্থাশীল সব দলকে তাতে যুক্ত হতে হবে।’’

এই সুরে হামেশাই সরব হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে কি এই লড়াইয়ে মমতার দলের পাশে থাকতে চায় সিপিএম? দলীয় সূত্রের বক্তব্য, ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে নানা বিরোধী দল একসঙ্গেই আছে। রাজ্যের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে লড়াই চললেও কোনও রাজ্যে অগণতান্ত্রিক কাজকর্ম বা অপশাসনে অভিযুক্ত কোনও দলের সঙ্গে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্ন নেই। পার্টি কংগ্রেসে রাজনৈতিক প্রতিবেদনের উপরে বিতর্কে বাংলার তরফে দেবাশিস চক্রবর্তী, সমন পাঠকেরা ব্যাখ্যা করেছেন, ‘বিশেষ পরিস্থিতি’তে কী ভাবে তাঁদের রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে।

রাজ্যের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে বিরোধী-সমন্বয়ে জোর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন, দল বাঁচানোও তাঁদের কাছে জরুরি। পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটের কথায়, ‘‘দলের নিজস্ব শক্তি বাড়াতেই হবে। বিশেষত, গত কয়েক বছরে যেখানে আমরা বেশি ধাক্কা খেয়েছি, সেই বাংলা ও ত্রিপুরায়। এ ছাড়া কোনও পথ নেই!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pinarayi Vijayan MK Stalin

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy