বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ বোধ হয় আর মিলবে না! এখন মার্চের শেষে মাথা গুঁজে কাজ করতে হয় সরকারি-বেসরকারি অফিসের অ্যাকাউন্টস দফতরের অফিসার বা ব্যাঙ্কের কর্তাদের। এ বার অর্থ বছর বদলে গেলে সেই ব্যস্ততার সময়টাই হাজির হবে ডিসেম্বরে। সরকারি বাবুরা এতে চটতে পারেন, তবে মোদী সরকারের আশা, অর্থ বছর এপ্রিলের বদলে জানুয়ারি থেকে শুরু হলে চাষিরা দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করবেন। কারণ তাঁরাই এতে লাভবান হবেন সব থেকে বেশি।
কারণ বাজেট তৈরির সময় এখন বর্ষার প্রভাব পুরো বোঝা যায় না। তাই কৃষির প্রয়োজন বুঝে বাজেটে বরাদ্দ করা যায় না। অথচ এখনও দেশের জিডিপি-র ১৫%-ই আসে কৃষি ক্ষেত্র থেকে। গ্রামের প্রায় ৬০% পরিবার এখনও কৃষির উপরেই নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২২-এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে চান। তার জন্য কৃষি পরিকাঠামোয় প্রয়োজন মাফিক বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রয়োজন।
রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে মোদী জানুয়ারি-ডিসেম্বরকে আর্থিক বছর করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। নীতি আয়োগের কর্তাদের যুক্তি, যে কোনও অর্থবর্ষেই আগের বছরের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব থেকে যায়। এতে জুন থেকে সেপ্টেম্বরে খরা হলেও তার প্রভাব বুঝে পরের বছরের জন্য সেচ বা সারে ভর্তুকি বাড়ানো যাবে। ১ জানুয়ারি অর্থবর্ষ শুরু হলে বাজেট পেশ হবে নভেম্বরে। বাজেটের হিসেবনিকেশ অক্টোবরেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। খরিফ ও রবি, দুই শস্যের ফলন সম্পর্কেই স্পষ্ট ধারণা মিলে যায় অক্টোবরে।
আরও পড়ুন: গরহাজিরার প্রশ্ন তুলতেই মমতার পাল্টা
অর্থনীতিবিদেরা অবশ্য এখনই এ বিষয়ে তাড়াহুড়োর পক্ষপাতী নন। কারণ, জিএসটি চালু হবে বলে শিল্প বা ব্যবসায়ী সংস্থাগুলি নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সময় ও অর্থ ব্যয় করছে। এর মধ্যে অার্থিক বছরও বদলে গেলে চাপ পড়বে আরও। কংগ্রেস নেতা তথা অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বীরাপ্পা মইলির যুক্তি, ‘‘সরকারের উচিত ছিল, একবারেই ক্যালেন্ডার বছরকে অর্থ বছরে বদলে নেওয়া। তা না করে বাজেট এক মাস এগিয়ে দেওয়ার ফলে মাত্র ন’মাসের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বাজেট তৈরি করতে হয়েছে।’’
মোদী সরকারের অবশ্য যুক্তি, স্বাধীনতার আগে দেশে আর্থিক বছর জানুয়ারি থেকেই শুরু হতো। ১৮৬৭-তে ব্রিটিশরা তাদের দেশের সঙ্গে তাল মেলাতে এ দেশেরও আর্থিক বছর এপ্রিল থেকে শুরু করে। অথচ গোটা বিশ্বের বেশির ভাগই দেশই এখন ক্যালেন্ডার বছরকেই আর্থিক বছর হিসেবে মেনে চলে। বিশ্বব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy