Advertisement
E-Paper

জয়শঙ্করকে বেছে চমক দিলেন মোদী

বিন্দুমাত্র পূর্বাভাস না থাকা এই সিদ্ধান্তটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক শিবিরে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় থেকেই নরেন্দ্র মোদীর প্রিয় প্রাক্তন এই বিদেশসচিব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৯ ০৩:০৪
শপথ গ্রহণের পর এস জয়শঙ্কর।—ছবি রয়টার্স।

শপথ গ্রহণের পর এস জয়শঙ্কর।—ছবি রয়টার্স।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে চা-চক্রে আমন্ত্রণ করেছিলেন আগামী মন্ত্রিসভার সদস্যদের। আর সেই আমন্ত্রিতের তালিকায় নেতা-সাংসদদের পাশাপাশি ছিলেন প্রাক্তন কূটনীতিবিদ ও সাবেক বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর!

বিন্দুমাত্র পূর্বাভাস না থাকা এই সিদ্ধান্তটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক শিবিরে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় থেকেই নরেন্দ্র মোদীর প্রিয় প্রাক্তন এই বিদেশসচিব। কিন্তু তাঁকে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ানো হবে, এটা অনুমান করতে পারেননি কেউই।

আজ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রথম সারিতে জয়শঙ্করকে দেখেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবেই তাঁকে রাখছেন মোদী। সুষমা স্বরাজ শপথ না নেওয়ায়, দুইয়ে দুইয়ে চার করে প্রাথমিক ভাবে এমন সম্ভাবনার কথাও ভাবা হয় যে তাঁকে বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে।

আরও পড়ুন: বাদ গত বারের অর্থমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, আরও যে মন্ত্রীরা জায়গা পেলেন না এ বার

আবার বিজেপি সূত্রের খবর, বিশ্ববাণিজ্যের টানাপড়েনের সমীকরণ সামলাতে জয়শঙ্করকে বাণিজ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ক্ষেত্রে এখন বেশ জটিলতা চলছে। ইরান থেকে তেল আমদানি নিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে চিনের সঙ্গে। এই সঙ্কটে জয়শঙ্করের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করতে চাইছেন মোদী, এমনটাই বলছেন বিজেপি সূত্র।

১৯৭৭ সালের ব্যাচ-এ প্রথম স্থানাধিকারী এই আইএফএস অফিসারকে মোদী তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসার ফলে একাধিক বার্তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। চিন এবং আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করেছেন জয়শঙ্কর। কাজ করেছেন রাশিয়াতেও। সাবলীল ভাবে রাশিয়ান এবং মান্দারিন বলতে পারেন তিনি। আগামী দিনে এই তিনটি রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নিরাপদে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া মোদীর অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। বিশেষত চিনের সঙ্গে সম্পর্কে গত পাঁচ বছরে যে ঝড় ঝাপটা গিয়েছে, তার ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করতে বার বার জয়শঙ্কর অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত সে ভূমিকা থেকেছে মূলত কৌশলগত। লাদাখের দেবসাং-এ চিনা সেনার অনুপ্রবেশ এবং ডোকলামে চিন-ভারতের মুখোমুখি সংঘর্ষ প্রশমিত করতে জয়শঙ্করের ভারসাম্যের কূটনীতিকেই কাজে লাগিয়েছিলেন মোদী। মনমোহন সিংহের জমানায় ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তির সফল রূপায়নে রণেন সেনের পাশাপাশি জয়শঙ্করের ভূমিকাও ছিল উল্লেখযোগ্য। আজ পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে তাঁর শপথ নেওয়ার পর জয়শঙ্করের এক সময়ের সতীর্থ রণেন সেনের কথায়, ‘‘বাণিজ্য এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে অন্যান্য রাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আজকাল। এই সংযোগ যার বা যাঁদের রয়েছে তাঁদের রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগালে ফল পাওয়া সম্ভব। খুবই ভাল সিদ্ধান্ত।’’

মোদী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যখন চিন সফরে যান, জয়শঙ্কর তখন সে দেশে রাষ্ট্রদূত। তিনি নিজের উদ্যোগে মোদীকে চিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন। গুজরাতে চিনা বিনিয়োগ টানার জন্যও যথেষ্ট সহায়তা করেছিলেন। বিষয়টি ভোলেননি মোদী। তিনি ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন বিদেশসচিব সুজাতা সিংহের মেয়াদ কাটছাঁট করে জয়শঙ্করকে পদে বসানো হয়েছিল। তার পরে এ বার পূর্ণমন্ত্রী।

Subrahmanyam Jaishankar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy