মায়ের সঙ্গে নতুন বছরের শুরুটা কাটাতে শনিবার রাতেই গোয়া পৌঁছেছেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস নেতারা এমনটাই বলছেন। সেখান থেকেও নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর ‘ভক্ত’দের একহাত নিলেন কংগ্রেস সভাপতি। বিঁধলেন মোদীর ফাঁপা প্রতিশ্রুতির জন্য।
আজই রেডিওর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গত লোকসভা ভোটের প্রচারে দেওয়া একাধিক প্রতিশ্রুতি সুকৌশলে পিছিয়ে দিয়েছেন ২০২২ সাল পর্যন্ত। কৃষকদের দুরবস্থা ঘোচানো, রোজগার বাড়ানোর মতো বিষয়গুলির ধারেকাছেও ঘেঁষেননি। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে বছর ঘুরতেই প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়গুলি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল নানা মহলে। মোদী অবশ্য তার পরেও নড়ে বসেননি। যার খেসারত সম্প্রতি মোদীকে দিতে হয়েছে নিজের রাজ্য গুজরাতেই। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। একমাত্র গুজরাতের শহরের ভোটই এ যাত্রায় মুখ রেখেছে মোদীর। কিন্তু সে শহরেও যে কী হাল, অন্য একাধিক বিষয়ের সঙ্গে রাহুল আজ সেটিও তুলে ধরলেন।
আজ প্রধানমন্ত্রীর রেডিও-বার্তার আগেই রাহুল টুইট করে বলেন, ‘‘প্রিয় মোদী-ভক্তগণ, স্মার্ট সিটির ৯,৮৬০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে! চিন আমাদের হারিয়ে দিচ্ছে আর আপনাদের প্রভু ফাঁপা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন! ভারতে রোজগার বাড়ানো জরুরি। দয়া করে তাঁকে (মোদী) পরামর্শ দিন, সে দিকেই নজর দিতে।’’
রাহুল যখন মোদীকে বিঁধছেন, সেই সময় দিল্লিতে দলের নেত্রী সুস্মিতা দেব কংগ্রেস দফতরে নিয়ে আসেন ‘এক পদ এক পেনশন’ নিয়ে আন্দোলনরত প্রাক্তন সৈনিকদের। সেনাদের স্বাস্থ্য প্রকল্পের বিমার টাকা ২-৩ গুণ বাড়ানো থেকে পাক-হানা রুখতে ব্যর্থতা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার গোপন বৈঠক-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে মোদীকে তোপ দাগেন প্রাক্তন সেনারা। প্রশ্ন তোলেন মোদীর ‘দেশপ্রেম’ ও ‘জাতীয়তবাদ’-এর স্লোগান নিয়েও।
বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘রাহুল গাঁধী তোপ দাগছেন ছুটিতে থেকে। তা-ও তো আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। আজ পর্যন্ত একটিও ছুটি নেননি তিনি। আগে রাহুল গাঁধী ‘সিরিয়াস’ হোন, তার পর প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করার অধিকার অর্জন করুন।’’ বিজেপির বক্তব্যের জবাবে কংগ্রেসের অনেকেই বলছেন, নতুন বছরটি মায়ের সঙ্গে কাটাতে গোয়ায় গিয়েছেন রাহুল। এ ব্যাপারে রাজ্য নেতাদেরও কিছু জানাননি। এটি পারিবারিক বিষয়। গত বছরেও সনিয়া, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা সেখানে ছিলেন। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের এক নেতা মোদীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘অনেকে তো নিজের পরিবারকেই দূরে রাখেন! আমাদের নেতা পরিবারকে অন্তত সময় দেন।’’