প্রচার সভায় নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার বিহারের বাঁকা জেলায়।— নিজস্ব চিত্র।
ভোটের বিহারে নিজের প্রথম নির্বাচনী প্রচার সভা থেকে মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘বুলেট শুধু বিনাশই ডেকে আনে। ব্যালটের মাধ্যমেই উন্নয়ন সম্ভব।’’
বিহারের অন্যতম মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা বাঁকায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পিছনে বিধানসভা ভোটের অঙ্কই দেখছে দলগুলি। জঙ্গল আর বন্দুক ছেড়ে বেশ কয়েক জন বড় মাপের মাওবাদী নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে গত ক’দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে সেই জল্পনা বাড়বে। পাশাপাশি প্রতি বারই নির্বাচনে স্থানীয় বিভিন্ন মাওবাদী গোষ্ঠী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ বারে মাওবাদী গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া বিজেপি। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারসভায় এনডিএ-র অন্যতম সহযোগী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝি নিজেকে ‘সবচেয়ে বড় নকশাল’ বলে ঘোষণা করেছিলেন। তা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান সার্বিক ভাবে মাওবাদী প্রভাবিত বিহারের ভোট-রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করল। সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্তত ৩৫টি বিধানসভা
আসনে মাওবাদীদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দলিত এবং মহাদলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা ‘অত্যাচারের’ শিকার হয়ে জঙ্গি খাতায় নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের রাজনীতির মূলস্রোতে ফিরিয়ে এক ঢিলে একাধিক পাখি মারতে চাইছে বিজেপি। এবং এ কাজে বিজেপিকে বড় ভরসা জোটসঙ্গী জিতনরাম। নীতীশ কুমারের এই প্রাক্তন সহযোগী মাওবাদী এলাকা মখদুমপুরের দীর্ঘদিনের বিধায়ক। এ বারেও ওই কেন্দ্রেই দাঁড়িয়েছেন। একই সঙ্গে বিধানসভার বর্তমান অধ্যক্ষ তথা জেডিইউ প্রার্থী উদয়নারায়ণ চৌধরির বিরুদ্ধে ইমামগঞ্জ কেন্দ্রেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। বিহার রাজনীতির কুশীলবদের খবর, উদয়নারায়ণের সঙ্গে নকশাল গোষ্ঠীগুলির সম্পর্ক ‘অত্যন্ত ভাল’। তিনি নিজেও মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেন উদয়। তাঁর বিরুদ্ধে লড়তে নেমে বিক্ষুব্ধ মাওবাদীদের নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া জিতনরাম। বাঁকা থেকে তাঁর আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের পরে গত আড়াই দশকে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী বাঁকায় এলেন বলে আজ নিজেই দাবি করেছেন তিনি।
এই জেলায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে থাকেন। আর এখানে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান বাধা হল মাওবাদীদের নানা গোষ্ঠী। বাঁকার তিন দিকে জামুই, মুঙ্গের এবং ভাগলপুর জেলাও মাওবাদী প্রভাবিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy