এইচ-১বি ভিসা মঞ্জুর করার আগে শীঘ্রই আরও কড়া যাচাইপ্রক্রিয়া আনতে চলেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। সেই নিয়ম কার্যকর করতে এ বার ভারতেও পিছিয়ে দেওয়া হল এইচ-১বি ভিসার ইন্টারভিউয়ের তারিখ। ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জনিয়েছে, ডিসেম্বরে যাঁদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল, তাঁদের ইন্টারভিউয়ের তারিখ আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আচমকা এই দিনক্ষণ বদলের জেরে বিপাকে পড়েছেন বহু ভারতীয়।
মঙ্গলবার রাতে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যে সব ভিসা আবেদনকারীর অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ বদলে গিয়েছে, তাঁদের সাহায্য করবে ‘মিশন ইন্ডিয়া’। নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিনক্ষণ নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে সে ক্ষেত্রেও সাহায্য করা হবে। তবে দূতাবাস আবেদনকারীদের সতর্ক করে জানিয়েছে, ইন্টারভিউয়ের পুনঃনির্ধারিত তারিখ জানানোর পরেও যদি কোনও আবেদনকারী পুরনো তারিখে কনস্যুলেটে যান, তা হলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এর একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি যাঁদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল, সেই অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলির তারিখ বদলে আগামী বছরের মার্চে করা হয়েছে। তবে ঠিক কত জনের আবেদনের দিনক্ষণ বদলে গিয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে এক শীর্ষ আইনসংস্থার আইনজীবী স্টিভেন ব্রাউনের কথায়, ‘‘আমরা যা কানাঘুষো শুনেছি, মিশন ইন্ডিয়া-র এই বিবৃতি সেটাই নিশ্চিত করে দিয়েছে। এটা বোঝা যাচ্ছে যে চলতি মাসের বেশ কয়েকটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করে মার্চ মাসে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ধারণা, আবেদনকারীদের সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল খুঁটিয়ে দেখার জন্যই এই অতিরিক্ত সময় নিতে চাইছে মার্কিন বিদেশ দফতর।’’
এইচ-১বি হল একটি অ-অভিবাসী ভিসা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা সাময়িক ভাবে আমেরিকায় থেকে সেখানকার সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারেন। এইচ-১বি ভিসা নিয়ে প্রতি বছর ভারত থেকেও বহু মানুষ আমেরিকায় যান। তবে সম্প্রতি আমেরিকার বিদেশ দফতর নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে এইচ-১বি ভিসা মঞ্জুর করার আগে যাচাইপ্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে। প্রত্যেক আবেদনকারীর বায়োডেটা এবং ‘লিঙ্কডইন’ প্রোফাইল খতিয়ে দেখা হবে। এমনকি, আবেদনকারীর পরিবারের কোনও সদস্য ভুল তথ্য ছড়ানো বা তথ্যবিকৃতির মতো ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা-ও যাচাই করা হবে। আবেদনকারী যদি কারও বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন, সে ক্ষেত্রে খারিজ হয়ে যেতে পারে তাঁর ভিসার আবেদন। তাই আমেরিকার বিদেশ দফতরের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, আবেদনকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য তাঁদের সমাজমাধ্যমে ‘পাবলিক’ করে রাখতে হবে। অর্থাৎ, সেগুলি লুকিয়ে রাখা যাবে না। সমাজমাধ্যমে তাঁদের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করেই ভিসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ট্রাম্প প্রশাসন।