Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হিন্দুত্ব প্রচারেও মঞ্চ লালকেল্লা

দু’টি মুখ। লক্ষ্য এক। নরেন্দ্র মোদী ও মোহন ভাগবত। এক অদৃশ্য সমঝোতায় হাতে হাত ধরে দু’জনেই নেমেছেন শক্তি বাড়াতে। এক জনের হাতিয়ার উন্নয়ন। অন্য জনের হিন্দুত্ব। উন্নয়নের হাতিয়ার নিয়ে লালকেল্লা থেকে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নজিরবিহীন ভাবে এ বার গৈরিক শিবিরের শক্তিবৃদ্ধিরও মঞ্চ সেই লালকেল্লা।

গীতা মহোৎসব অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

গীতা মহোৎসব অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৬
Share: Save:

দু’টি মুখ। লক্ষ্য এক।

নরেন্দ্র মোদী ও মোহন ভাগবত। এক অদৃশ্য সমঝোতায় হাতে হাত ধরে দু’জনেই নেমেছেন শক্তি বাড়াতে। এক জনের হাতিয়ার উন্নয়ন। অন্য জনের হিন্দুত্ব। উন্নয়নের হাতিয়ার নিয়ে লালকেল্লা থেকে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নজিরবিহীন ভাবে এ বার গৈরিক শিবিরের শক্তিবৃদ্ধিরও মঞ্চ সেই লালকেল্লা।

দশ বছর ইউপিএ সরকারের পর গেরুয়া শিবিরের স্বপ্নপূরণ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। লালকেল্লায় বিজেপির কোনও নেতা জাতীয় পতাকা উড়িয়েছেন। আর সেই লালকেল্লা থেকেই এ বছরের স্বাধীনতা দিবসে তাঁর সরকারের উন্নয়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন সেই উন্নয়নের পথে হেঁটেই সংগঠনের শক্তি আরও বাড়াতে চাইছেন তিনি। আর মোদীর এই জনপ্রিয়তার পিঠে সওয়ার হয়ে সঙ্ঘের শক্তি বাড়াতেও সমান তৎপর সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। ভাগবত গীতার ৫১৫১ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ বারে লালকেল্লায় বসছে গেরুয়া শিবিরের আয়োজন।

ঘটনাচক্রে অনেক বার বিদেশ সফরে গিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের গীতা উপহার দিতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। যে বিদেশ সফর নিয়ে আজও সংসদে হল্লা করেছেন বিরোধীরা। তার মোকাবিলায় বিজেপি আজ মোদীর বিদেশ সফরের সাফল্য তুলে পাল্টা পুস্তিকাও জারি করেছে। তবে স্বামী জ্ঞানানন্দ মহারাজের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী গীতা উৎসবে থাকছেন না মোদী। কিন্তু বিজেপি সরকার থাকায় যে লালকেল্লায় গীতা উৎসব করার অনুমতি পাওয়া সহজ হয়েছে তা মেনে নিচ্ছেন ওই উৎসবের উদ্যোক্তারা।

দু’ সপ্তাহ আগে দিল্লিতে তিন দিনের ‘বিশ্ব হিন্দু কংগ্রেস’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। গোটা বিশ্বে হিন্দুত্বের প্রসারই ছিল যার লক্ষ্য। ১৫ দিনের মধ্যেই ফের দেশ জুড়ে গীতার ৫১৫১ বছর ঘটা করে পালন করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রভাত ফেরি থেকে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আয়োজনের পাশাপাশি ৫১৫১ টি পরিবারকে দিয়ে গীতা পাঠ, গীতার প্রসারের জন্য ৫১৫১ জন যুবককে অঙ্গীকার করানো, ৫১৫১ যজমানকে দিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে বৃক্ষরোপণ, গরু সেবার মতো কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে আয়োজকরা। ৭ ডিসেম্বর লালকেল্লার অনুষ্ঠানে জড়ো করা হবে ৫১ হাজার মানুষকে। সেই অনুষ্ঠানে ভাগবত, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা মোদী সরকারের কিছু মন্ত্রী ও বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের। পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাতে থাকা লালকেল্লায় এই অনুষ্ঠানের অনুমতি যে মোদী সরকারের বদান্যতাতেই পাওয়া গিয়েছে তা মেনে নিয়েছেন আয়োজক সংস্থার কর্তা কেশব গুপ্ত।

প্রকাশ্যে হিন্দুত্ব-প্রচারে নারাজ মোদী। উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনকে ‘সুশাসন দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা হয়েছে আজই। মোদী-ভাগবতের সমঝোতায় হিন্দুত্ব প্রসারের ভার যে সঙ্ঘ পরিবারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE