ঘুমের দেশে: অর্থনীতির ঝিমুনি নিয়ে সংসদে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এর মধ্যেই ঝিমিয়ে পড়েন কর্মদক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে। পরে তাঁকে জাগান সতীর্থেরা। ছবি: রাজ্যসভা টিভি
আর্থিক বৃদ্ধি কমে আসতে পারে, কিন্তু এখনও মন্দা আসেনি। বস্তুত, মন্দা কখনওই আসবে না। আজ সংসদে এই দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ‘শর্ত’ একটাই, ওপর ওপর নয়, গভীর ভাবে দেখতে হবে অর্থনীতির অবস্থাকে।
অর্থনীতির ঝিমুনি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর এ-হেন জবাব শুনতে শুনতেই ঝিমুনি ধরেছিল মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডের। মোদী সরকারের নতুন কর্মদক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রী। যাঁর কাঁধে দেশের তরুণদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব।
অর্থমন্ত্রীর পিছনের সারিতেই বসে তাঁর ঝিমুনির দৃশ্য রাজ্যসভা টিভি মারফত সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে দেখে অন্য বিজেপি সাংসদেরা ঠেলে তুলে দেন মহেন্দ্রনাথকে। বিরোধীদের কটাক্ষ, সরকারি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, মোদী জমানায় চাকরির সুযোগ কমছে। ফলে কাজে উৎসাহ হারিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন মহেন্দ্রনাথ।
চলতি বছর এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। যা পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাই মনে করছেন, জুলাই-সেপ্টেম্বরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশে নেমে আসবে। আজ বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, গ্রামের মানুষের হাতে টাকা নেই। বাজারে চাহিদা নেই বলেই নতুন লগ্নি আসছে না। কিন্তু কেন্দ্র অর্থনীতির অসুখই মানতে চাইছে না। দাওয়াই দূর অস্ত্। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে যাননি নির্মলা। প্রতিবাদে কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি-সহ অধিকাংশ বিরোধী দল ‘ওয়াক আউট’ করে।
নির্মলা অবশ্য ইউপিএ সরকারের তুলনায় মোদী সরকারের জমানায় অর্থনীতির হাল ভাল বোঝাতে নানা মাপকাঠির পরিসংখ্যান দিয়েছেন। কিন্তু বেকারত্বের হার ও সংসার খরচের সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে আলোচনায় যাননি। বিরোধীরা কটাক্ষ করেছেন, মোদী সরকার যে ভাবে সরকারি পরিসংখ্যান ধামাচাপা দিচ্ছে, তাতে সেই সব পরিসংখ্যানের এসপিজি-নিরাপত্তা প্রয়োজন!
নির্মলার দাবি, ইউপিএ জমানায় ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট সংস্থার খাতায় অনাদায়ি ঋণের বোঝা বেড়েছিল। তার প্রভাব দেখা দিয়েছে দেরিতে। সেই কারণেই গত দু’বছরে বৃদ্ধির হার কমেছে। বিরোধীরা পাল্টা নোট বাতিলকে দায়ী করলেও নির্মলা তা মানতে চাননি।
এর আগে অর্থমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, নতুন প্রজন্ম ওলা-উবের ব্যবহার করছে বলে গাড়ি বিক্রি কমছে। আজ তিনি গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে দায়ী করেন। নির্মলার যুক্তি, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ভারত স্টেজ ৪ (বিএস ৪) মাপকাঠি মেনে তৈরি হওয়া কোনও নতুন গাড়ি বিক্রি করা যাবে না। কেন্দ্রও বিএস ৪ থেকে সরাসরি বিএস ৬-এ চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারণেই বিএস-৪ গাড়ি বিক্রি কমেছে।
অর্থমন্ত্রীর দাবি, গাড়ি সংস্থাগুলির ঘরে যত গাড়ি তৈরি হয়ে পড়েছিল, তার অধিকাংশই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy