কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য আলাদা টাউনশিপের জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দিল্লিতে। তা নিয়েই জম্মু-কাশ্মীরে রাজনৈতিক ঝড়ের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদ।
১৯৮০-র দশকে জঙ্গি সন্ত্রাসের জেরে উপত্যকা ছেড়েছিেলন কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিতরা। এখন দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্বাস্তু হিসেবে থাকেন তাঁরা। পণ্ডিতদের কাশ্মীরে ফেরানো বিজেপির কর্মসূচির অঙ্গ। সেই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েই শ্রীনগরে সরকার গড়েছেন মুফতি। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠকে মুফতি জানান, পণ্ডিতদের জন্য আলাদা টাউনশিপ গড়তে জমি দেবে রাজ্য।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে আসরে নেমেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বিরোধী দলগুলি। হুরিয়ত-সহ কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি, পণ্ডিতদের ফেরানোর নামে রা়জ্যের মধ্যে রাজ্য তৈরির চেষ্টা চলছে। এটি অনেকটা প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলিদের বসতি তৈরির মতো। কট্টরপন্থী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি বলেন, ‘‘কাশ্মীরকে প্যালেস্তাইন বানানোর চেষ্টা চলছে। মানুষের কাছ থেকে জমি কেড়ে নেওয়া হবে।’’ এ নিয়ে কাশ্মীরে বিক্ষোভও শুরু হয়েছে।
পণ্ডিতদের ফেরানোর সমর্থক হলেও তাঁদের জন্য আলাদা টাউনশিপের পরিকল্পনায় সায় নেই ন্যাশনাল কনফারেন্সেরও। টুইটারে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা জানান, কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফেরার বিরোধিতা করবেন না। কিন্তু তাঁরা বিচ্ছিন্ন কিছু কলোনিতে থাকবেন এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাতে তাঁদের উপযুক্ত নিরাপত্তাও দেওয়া যাবে না।
আজ জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় বিষয়টি তোলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়কেরা। জবাবে কিছুটা ব্যাখ্যা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের আক্রমণ করে বলেন, ‘‘টাউনশিপ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনার কথা কেউ জানেন না। তাও ইজরায়েলি কায়দায় বসতির কথা বলা হচ্ছে।’’ পিডিপির দাবি, পণ্ডিতদের জন্য তৈরি ‘কম্পোজিট টাউনশিপ’-এ কেবল তাঁরাই থাকতে পারবেন এমন নয়। তবে কারা তাতে থাকতে পারবেন তা স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতিকদের মতে, পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ে সুর নরম করেছিলেন মুফতি। জঙ্গি হানায় বিপাকেও পড়েছিলেন তিনি। তাই বিজেপির দাবি মেনে পণ্ডিতদের টাউনশিপের কথা বলেছিলেন। এ বার তা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক ঝড়ের মুখে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ভারসাম্যের খেলা কত দিন চালাতে পারেন, তাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy