সুদীপ রায়বর্মনদের সঙ্গে বৈঠকে মুকুল। আগরতলায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
অন্তর্দ্বন্দ্ব দিয়ে শুরু হল ত্রিপুরায় তৃণমূলের নব কলেবর তৈরির প্রয়াস! আজ দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের আগরতলা সফরে গরহাজির থাকলেন ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুরজিৎ দত্ত। এ দিন মুকুল যে আগরতলা আসবেন, তা জানা সত্ত্বেও সুরজিৎবাবু দিনকয়েক আগে ভুবনেশ্বরে মেয়ের বাড়ি চলে গিয়েছেন। ত্রিপুরা তৃণমূলের বাকি নেতারাও ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ অবস্থান নেন।
এ দিন আগরতলা বিমানবন্দরে মুকুলবাবু নামার পর তৃণমূলের অরুণ ভৌমিক ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি। বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসের দলের প্রধান নেতা সুদীপ রায়বর্মন ও তাঁর সঙ্গীরাই ছিলেন মুকুলবাবুর সঙ্গী। বিমানবন্দর থেকে তাঁকে নিয়ে সুদীপবাবু চলে আসেন নিজের ফ্ল্যাটে। সেখানেই তৃণমূলের সদস্য হওয়ার আবেদন পত্র মুকুলবাবু তাঁদের দেন। পরে তাঁরা যান বাধারঘাটের কংগ্রেস
বিধায়ক দিলীপ সরকারের বাড়ি। সুদীপবাবুর সঙ্গে এখন ৫ কংগ্রেস বিধায়ক আছেন। বিধানসভায় দলত্যাগ বিরোধী আইনের
খাঁড়া এড়াতে ১০ সদস্যের কংগ্রেস পরিষদীয় দলের অন্তত ৭ জন
সদস্যকে নিয়ে দলবদল করাতে হবে। সে জন্য দিলীপবাবুকে সঙ্গে আনা দরকার। এ দিন প্রথমে মুকুল একাই বৈঠক করেন দিলীপবাবুর সঙ্গে। দিলীপবাবুর এক ঘনিষ্ঠ বলেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব সুদীপবাবু দেওয়ার
পর, দাদা বাধারঘাটের প্রতিটি
বুথ কমিটির সঙ্গে কথা বলেছেন। সবাই কংগ্রেস ছাড়ার পক্ষে মত দেয়। সেই মতো মুকুলবাবুকেও তিনি মতামত জানিয়েছেন।’’ এরপর মুকুল দেখা করেন আইএনপিটি নেতা বিজয় রাঙ্খলের সঙ্গে।
বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে দেখা যায় ত্রিপুরা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী ও অরুণ ভৌমিককে। বিক্ষুব্ধ ৬ কংগ্রেস বিধায়কও ছিলেন।
আগে কলকাতায় ত্রিপুরার রতন চক্রবর্তী ও আরও দুই তৃণমূল নেতা এসে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে ধরেন, যাতে ত্রিপুরায় তৃণমূল পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব মুকুলবাবুর হাতে না যায়।
এ দিন দেখা গেল সেই উদ্যোগ
থেকে কিছুটা পিছিয়ে
গিয়েছেন রতনবাবুরা।
মুকুলবাবু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যেমন ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছে তৃণমূল, ত্রিপুরাতেও ২৩ বছরের বাম জমানার অপশাসন থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়ে সরকার গড়বে তৃণমূল।’’ ভুবনেশ্বর থেকে ফোনে সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়ছি না। বিধায়ক দিলীপ সরকারকে ভাঙিয়ে আনার দায়িত্ব মুকুল আমাকে দিয়েছে। আমি চেষ্টা করব।’’ কিন্তু তিনি সুদীপ রায়বর্মণ ও তাঁর বাবা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর বর্মণের তীব্র বিরোধী, তাও জানিয়ে দেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই দু’জনকে রাজ্যের মানুষ পছন্দ করে না। ওরা যদি আমাদের দলে আসে তবে আমার নির্দেশ মানতে হবে, শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy