Advertisement
E-Paper

মুলায়মের পাঁচ দফা সূত্রেও রয়ে গেল চিন্তা

একশো ঘণ্টার যুদ্ধে বিরতি হল পাঁচ দফা সূত্রে। কিন্তু মুলায়ম সিংহের সেই মলম সত্ত্বেও সংঘাতের ক্ষত রয়েই গেল যাদব পরিবারে। গত কাল দিল্লি থেকে লখনউ পৌঁছেই দফায় দফায় বৈঠক করেন মুলায়ম। বসেন ছেলে অখিলেশের সঙ্গেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৪

একশো ঘণ্টার যুদ্ধে বিরতি হল পাঁচ দফা সূত্রে। কিন্তু মুলায়ম সিংহের সেই মলম সত্ত্বেও সংঘাতের ক্ষত রয়েই গেল যাদব পরিবারে।

গত কাল দিল্লি থেকে লখনউ পৌঁছেই দফায় দফায় বৈঠক করেন মুলায়ম। বসেন ছেলে অখিলেশের সঙ্গেও। বৈঠকের পথেই লড়াই থামানোর পাঁচ দফা সূত্র তৈরি করে ফেলেন সমাজবাদী পার্টির ‘নেতাজি’। সূত্রগুলি হল— ১) মুলায়মের ভাই শিবপাল যাদবের মন্ত্রক ফেরানো হবে। ২) সব পদ থেকে ইস্তফা দিলেও শিবপালের হাতেই থাকবে দলের ভার। ৩) শিবপাল-ঘনিষ্ঠ বিতর্কিত মন্ত্রী গায়ত্রীপ্রসাদ প্রজাপতিকে সম্প্রতি বরখাস্ত করেছিলেন অখিলেশ। তাঁকে মন্ত্রিসভায় ফেরানো হবে। ৪) অখিলেশকে জানিয়েই বিধানসভা ভোটে প্রার্থী বাছাই হবে। ৫) ‘বহিরাগত’ অমর সিংহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ প্রকাশ্যে যদিও মুলায়ম দাবি করেছেন, তাঁর পরিবারে সংঘাত নেই। অন্তত যতদিন তিনি বেঁচে আছেন। আর তাঁর পুত্র বলেছেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী। আবার নেতাজির ছেলেও। বাবাকে খুশি করতে সব কিছু করতে রাজি।’’ তবে সকালে একান্ত বৈঠকে বাবাকে অখিলেশ বলেছেন, অমর সিংহদের মতো যে নেতারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এবং প্রার্থী বাছাই যেন তাঁকে না জানিয়ে না হয়। মুলায়ম দু’টি বিষয়েই ছেলেকে আশ্বস্ত করেন।

এর পর সন্ধ্যায় অখিলেশও জানিয়ে দেন, শিবপাল তাঁর মন্ত্রক ফিরে পাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই সমঝোতা এক সাময়িক উপশম মাত্র। আসলে যাদব পরিবারে আরও বড় অন্তর্দ্বন্দ্বের ক্ষেত্র এখান থেকেই তৈরি হয়ে গেল। কারণ প্রথমত, সর্বস্তরে এই বার্তা গেল যে, মুলায়মই দলের ‘বস্’, অখিলেশ নন। মুলায়ম-পুত্রের থেকে দলের সভাপতিত্ব আগেই গিয়েছে। উল্টে সেই পদে বসেই মন্ত্রিসভায় ফিরতে চলেছেন শিবপাল। এর পর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতায় আসতে না পারলে অখিলেশের হাতে না থাকবে সরকার, না থাকবে দলের রাশ।

দ্বিতীয়ত, মুলায়ম যদিও অখিলেশকে জানিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু তা নিয়েও যাদব পরিবারে কোন্দলের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। শিবপাল বলেছেন, ‘‘সব প্রার্থী নেতাজিকে দেখিয়ে হবে। অখিলেশ তখনই দেখে নিতে পারবেন।’’ কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, কার্যক্ষেত্রে শিবপাল থেকে শুরু করে অখিলেশের আর এক কাকা রামগোপাল যাদব— সকলেই চাইবেন, ভোটে নিজেদের অনুগামীদের বেশি করে টিকিট দিতে। আবার অখিলেশের উপরেও তাঁর নিজের শিবিরের চাপ থাকবে। অতএব মুলায়মের বন্দোবস্তে কোনও স্থায়ী সমাধান আদপে হল না।

প্রশ্ন হল, অমর সিংহের বিরুদ্ধে কী ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে?

কৌশলী অমর বলেছিলেন, অখিলেশ তাঁর ‘ছেলের মতো’। আজ কিন্তু অখিলেশ বলেছেন, ‘‘ওঁকে আমি কাকা বলে মনে করি না।’’ সপা সূত্রের খবর, মুলায়ম অমরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা অখিলেশকে বলেছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁর ডানা ছাঁটা খুব বেশি সম্ভব নয় ‘নেতাজি’র পক্ষে। কারণ, অমরকে তিনি দলে নিয়েছেনই নিজের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করতে। মুলায়ম এখন রাষ্ট্রপতি পদে বসার স্বপ্ন দেখছেন। আবার বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির জোটের মুখ হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও বাসনা আছে তাঁর। মুলায়ম জানেন, তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তব করতে পারেন বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজে পটু অমর সিংহ। শিবপালও আজ বলেছেন, ‘‘অমর সিংহ আদৌ সঙ্কট তৈরি করেননি।’’

আজ তাই মুলায়মের বার্তা— যে কোনও রাজনৈতিক দল আসলে ‘শিবজি কি বারাত’। সকলকে নিয়েই চলতে হয়। সকলের সঙ্গে সকলের মনের মিল জরুরি নয়। কিন্তু সবারই কিছু না কিছু উপযোগিতা আছে।

Mulayam Singh Yadav Samajwadi Party Akhilesh Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy