রাজ্যপাল রাম নাইকের কাছে অখিলেশ। বুধবার। ছবি: পিটিআই।
কুস্তি চলছেই যাদবদের আখড়ায়! ধোবি পাটে একে অপরকে ধরাশায়ী করতে প্যাঁচ কষছেন মুলায়ম সিংহ যাদবের ভাই ও ছেলে। ভাঙনের মুখে নিজে হাতে গড়া দল। সেই ভাঙন রুখতে এ বার ঝুলি থেকে একটি ‘মহাগঠবন্ধন’-এর রংমশাল বার করে আনলেন মুলায়ম। বিজেপির জুজু দেখিয়ে বিহারের ধাঁচে একটি মহাজোট খাড়া করার দিকে নজর দিলেন তিনি। যাতে মুলায়ম শিবিরের গৃহযুদ্ধ থেকে মায়াবতীর দল বা বিজেপি ফায়দা তুলতে না পারে।
সামনেই সমাজবাদী পার্টির রজত জয়ন্তী সমারোহ। ৫ নভেম্বরের ওই অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে সমাজবাদী পার্টি প্রধানের নতুন কৌশল, জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের পুরনো শরিক, লোহিয়া-পন্থী ও চরণ সিংহের অনুগামীদের একজোট করা। আমন্ত্রণের তালিকায় নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ, শরদ যাদব, এইচ ডি দেবগৌড়া, অজিত সিংহর নাম। দাদা নেতাজি-র নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে দিল্লি পৌঁছেছেন ভাই শিবপাল। প্রয়োজনে কংগ্রেসকেও কাছে টানার ইঙ্গিত দিয়ে, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে জনতা পরিবারের সঙ্গে গাঁধীবাদীদেরও এককাট্টা করার কথা বলেছেন তিনি।
পারিবারিক লড়াইয়ের ছিদ্র দিয়ে বিজেপি যাতে কোনও সুযোগ নিতে না পারে, অখিলেশও এ দিন বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রকে। বিজেপির দাবি, অখিলেশ বিধানসভায় গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী আজ রাজ্যপাল রাম নাইকের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন, বিধানসভায় গরিষ্ঠতা রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে অখিলেশ জানিয়েছেন, ৪০৩ আসনের বিধানসভায় তাঁর দলের বিধায়ক রয়েছেন ২২২ জন। দলীয় কোন্দল থাকলেও তাঁদের মধ্যে ১৮৫ জন তাঁকেই সমর্থন জানাবেন।
যাদব আখড়ায় কুস্তি কি তাতে থামছে! তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রেফারি মুলায়ম ভাই শিবপালের পক্ষে। ছাড়ার পাত্র নন অখিলেশও। কালই মুলায়ম জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের আগে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে না। তবু ধুলো ঝেড়ে উঠে অখিলেশ চাইছেন রাজ্য জয়ে বেরোতে। চাইছেন ৫ বছরে তাঁর সরকার কী কী করেছে মানুষের কাছে তা তুলে ধরে ভোট চাইতে। প্রস্তুত হচ্ছেন ৩ তারিখ রথযাত্রায় বেরোতে।
প্রদেশ সভাপতি শিবপাল কিন্তু প্যাঁচ কষে চলেছেন। আজ যখন অখিলেশের বাড়িতে রথযাত্রার প্রস্তুতি বৈঠক শুরু হব-হব, ঢিল ছোড়া দূরত্বে দলের সদর দফতরে শিবপাল ঘোষণা করেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেই দলের বিধান পরিষদের সদস্য আশু মালিককে চড়থাপ্পড় মারার জন্য অযোধ্যার বিধায়ক তথা মন্ত্রী তেজনারায়ণ পাণ্ডেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এই যুব-নেতাই অখিলেশের সঙ্গে দলের যুবনেতাদের যোগসূত্র। অখিলেশ তাঁকে ২০১২-তে অযোধ্যা থেকে প্রার্থী করেন। বাবরি মসজিদ-কাণ্ডের পর সেই প্রথম বিজেপিকে হারিয়ে ওই আসনে জেতে সমাজবাদী পার্টি। তেজনারায়ণকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন শিবপাল। তবে মাথা নোয়াননি অখিলেশ। তেজনারায়ণকে সরাননি। শিবপাল ও তাঁর অনুগামীদেরও মন্ত্রিসভায় ফেরাতে উদ্যোগী হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy