ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এবং ভাই তথা দলের সাংসদ রামগোপাল যাদবকে সমাজবাদী পার্টি থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করে দিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। শুক্রবার সকালে শোকজ নোটিস জারি করার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেন মুলায়ম। উত্তরপ্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে আলাদা প্রার্থী তালিকা সামনে আনার জন্যই সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো তথা বাবা মুলায়ম সিংহ যাদবের এই সিদ্ধান্ত।
নেহাতই দলের স্বার্থরক্ষার্থেই যে এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুলায়ম। তিনি জানান, রামগোপাল মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশকে ভুল পথে চালনা করছিলেন। যা অখিলেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এমনকী এই দলটার জন্যও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বারবার বোঝানো সত্ত্বেও অখিলেশ তা বুঝতে পারছিলেন না। দল চালনার পিছনে পুত্র অখিলেশ এবং রামগোপালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘দলের স্বার্থরক্ষাই আমাদের কাছে প্রধান গুরুত্ব। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ অনেক কষ্টে দাঁড় করানো এই দলটার কোনও ক্ষতি যে একেবারেই বরদাস্ত করবেন না এতদিন জোর গলায় তা বলে এসেছিলেন মুলায়ম। এ দিন নিজের পুত্রের বিরুদ্ধে এমন এক কড়া সিদ্ধান্ত তা প্রমাণ করে দিল।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অখিলেশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও শোকজ নোটিসের পরে কোনও ব্যাখ্যার সুযোগ না দিয়েই যে ভাবে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা ‘অসংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করেছেন রামগোপাল যাদব। তিনি বলেন, ‘‘একজন অপরাধীও বলার সুযোগ পায়, কিন্তু আমাদের কিছু বলতে দেওয়া হল না। এটা অসাংবিধানিক।’’ তবে সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে অখিলেশকে ফোন করে এই পরিস্থিতিতে মনোবল না হারানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে গিয়ে আলাদা প্রার্থী তালিকা বের করার জন্য এ দিন সকালেই অখিলেশ এবং রামগোপালকে শোকজ নোটিস দেন মুলায়ম। নোটিসে মুলায়ম জানতে চেয়েছেন, পার্টির বিরুদ্ধে গিয়ে এমন কাজ করার পরও কেন দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে না? কিন্তু শোকজ নোটিসের জবাব দেওয়ার পর্যাপ্ত সময়ও দেওয়া হয়নি তাঁদের।
আরও পড়ুন: দুপুরে বরফ গলেনি, রাতে সামনে এল পাল্টা তালিকা
যদিও সমাজবাদী পার্টির ইতিহাস ঘাটলে বহিষ্কারের পর দলে ফিরে আসার নজিরও রয়েছে। তাই অখিলেশের বহিষ্কার নতুন কোনও নাটকীয় মোড় নেয় কি না তা এখনই বলা সম্ভব হয়। এ দিনই অখিলেশকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর মুলায়মের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, যদি পুত্র অখিলেশ তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন, তাহলে তাঁকে পুনরায় দলে ফিরিয়ে আনা হবে কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে মুলায়ম বলেন, ‘‘অখিলেশ যদি আসে তাহলে দেখা যাবে।’’
যাদব বংশের অন্তর্দ্বন্দ্ব অবশ্য বহুদিন ধরেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুলায়ম এবং শিবপাল যাদবের সঙ্গে অখিলেশ-রামগোপাল শিবিরের মতপার্থক্য লেগেই ছিল। সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা নিয়ে তা চরমে ওঠে। একদিকে যখন পুত্র অখিলেশের শিবির কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে ভীষণ আগ্রহী, অন্য দিকে পিতা মুলায়ম জোটের বিরোধী ছিলেন। মুলায়ম বুধবারই ৩২৫টি আসনের একটি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেন। অখিলেশ তখন বুন্দেলখন্ডে ছিলেন। বাবার এই তালিকা ঘোষণার পর দিন অখিলেশ শিবিরও ২৩৫টি আসনের একটা পাল্টা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy