উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির আসন সমঝোতা নিয়ে গোপনে আলোচনা চলছিল। এর মধ্যেই মুলায়ম সিংহ যাদব আজ মন্তব্য করেছেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি কোনও দলের সঙ্গেই জোট করছে না।’’
পুত্র অখিলেশ যখন জোটের জন্য খোলাখুলি সওয়াল করছেন, আর পর্দার আড়ালে কথাও এগোচ্ছিল মুলায়মের সম্মতিতে, তখন সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতার মন্তব্য রাজনীতিতে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু জোট প্রশ্নই নয়, এ দিন অখিলেশকে মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতেও রাজি হননি মুলায়ম। মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমাদের দলে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী করা হয় না। বিধায়করাই নেতা ঠিক করেন।’’ টিকিট বিলি নিয়েও দলের অন্দরে মতবিরোধ চলে এসেছে প্রকাশ্যে।
৪০৩ আসনের বিধানসভার ৩২৫টি আসনেই মুলায়ম আজ সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। জোটের সম্ভাবনা খারিজ করে তাঁর মন্তব্য ও এই আসন সংখ্যা দেখেই অনেকে বলছেন, সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। কারণ, জোট বেঁধে রাজ্যে অন্তত ১০০টি আসনে লড়ার কথা হচ্ছিল কংগ্রেস ও অজিত সিংহের রাষ্ট্রীয় লোকদলের। এখন যা অঙ্ক দাঁড়াল, তাতে কংগ্রেসের জন্য খুব বেশি আসন খালি থাকছে না। জোট-পন্থীরা যদিও এতেও বিশেষ জট দেখছেন না। তাঁদের মতে, এর পরেও সমঝোতার অনেক পথ খোলা থাকে। যেমন কয়েকটি আসনে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা, পরস্পরের বিরুদ্ধে কমজোরি প্রার্থী দেওয়া কিংবা শেষ মূহূর্তে প্রার্থী-পদ প্রত্যাহারের সম্ভাবনা থেকেই যায়। আর উত্তরপ্রদেশে তো ভোট ঘোষণাই হয়নি। জোটের পথে হাঁটার সময় বাকি রয়েছে অনেক।
সমাজবাদী পার্টি জোট গড়লে ৩০০ আসন পেতে পারে বলে আগেই মন্তব্য করেছিলেন অখিলেশ যাদব। গত কাল রাহুল গাঁধীর মন্তব্যও জোট-জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছিল। সাংবাদিকরা জোট নিয়ে রাহুলকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের রণনীতি সবার সামনে বলে দেব কী ভাবে? আলাদা ভাবে কথা বললে আপনাদের কানে কানে জানাবো!’’ এর পরেই এল মুলায়মের এমন মন্তব্য।
সমাজবাদী পার্টির সাংবাদিক সম্মেলনের আজকের ছবিটাও জোট- বিরোধী শিবরাজ শিবিরের প্রভাবকেও সামনে এনে দিয়েছে। বিশেষ করে এখানে দু’টি বিষয় সবার নজর কেড়েছে। এক, মুলায়মের পাশে বসে শিবপাল। নেই অখিলেশ। মুখ্যমন্ত্রী বুন্দেলখণ্ড সফরে গিয়েছেন। সেই সময়েই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন শিবপাল। দুই, যে প্রার্থী তালিকা হয়েছে তাতে বাদ পড়েছেন অখিলেশ-ঘনিষ্ঠ অনেক মন্ত্রী-বিধায়কই। মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন অরবিন্দ সিংহ গোপ, পবন পাণ্ডে ও রামগোবিন্দ চৌধুরি।
ফলে ফের সামনে এসেছে যাদব পরিবারের লড়াইয়ের পুরনো কাহিনি। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সমাজবাদী পার্টির অন্দরমহলে ফের শুরু হয়েছে অন্য কোনও খেলা? কিছু দিন আগেই অখিলেশের বিরুদ্ধে সংঘাতে মুলায়মকে পাশে পেয়েছিলেন শিবপাল। বুন্দেলখণ্ডে অখিলেশ বলেন, ‘‘টিকিট পাননি এমন অনেক নেতা যে খুবই ভাল কাজ করছিলেন তা আমি নেতাজিকে জানাব। ওঁদের টিকিট দেওয়া উচিত।’’ প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, শিবপাল যাদব লড়বেন যশবন্তনগর থেকে। অখিলেশের জন্য এখনও কোনও আসনের কথা ঘোষণা হয়নি। মুলায়ম বলেন, ‘‘অখিলেশ কোন আসনে লড়বেন, তা তিনি নিজেই বেছে নিতে পারেন।’’
অখিলেশ এখন কোন পথে এগোন, সবার নজর সে দিকেই। দলীয় সূত্রে খবর, আগামিকাল দলের নেতাদের ক্ষোভ শুনতে একটি বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy