প্রতীকী ছবি।
আইএসের বিরুদ্ধে এ বার পোস্টার বয় হিসাবে কেরলের এক যুবককে ব্যবহার করতে চলেছে মুম্বই পুলিশ। উদ্দেশ্য একটাই, যে ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের ব্রেনওয়াশ করে ইসলামিক স্টেট নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করছে, সেটাকে বন্ধ করা। গত কয়েক মাসে কেরল থেকে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের দলে দলে ওই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার খবর আসছে। বেশ কয়েক জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। সচেতনতা বাড়াতে এর আগে বহু চেষ্টা চালিয়েছে প্রশাসন। এ বার এই অভিনব পন্থার সাহায্য নিল মুম্বই পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস)। এটিএস সূত্রের খবর, যাঁকে এই পোস্টার বয় বানানোর কথা ভাবা হয়েছে তিনি নিজেও এক সময় আইএসের প্রতি দুর্বল ছিলেন।
মুম্বইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র এই যুবককে কেন পোস্টার বয় বানাতে গেল এটিএস?
কেরলের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম ওই যুবকের। মেধাবী ছাত্র। সিরিয়া, ইয়েমেন এবং প্যারিসে জঙ্গি হামলা নিয়ে সোশ্যাল সাইটে নানা রকম বিতর্কিত মন্তব্য করতে শুরু করেন তিনি। ওই যুবক জানান, বিশ্বে মুসলিমদের উপর হামলার ভিডিও নিয়ম করে ইউটিউবে সার্ফ করতে শুরু করেন। অনলাইনে বেশ কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর নিয়মিত ‘চ্যাট’ হত। আইএসে যোগদানের জন্য তারা নানা ভাবে ব্রেনওয়াশ করতে শুরু করে। আইএসে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন তিনি। এটিএস ওই যুবকের পরিবার, বন্ধু এবং এক মৌলানার সহযোগিতায় আইএসে যোগ দেওয়া আটকায়।
কী ভাবে এই কাজ করল এটিএস?
এটিএস সূত্রে খবর, ওই যুবকের আচরণে অস্বাভাবিকত্ব লক্ষ্য করেই নজর রাখতে শুরু করেছিল তারা। বড় বড় দাড়ি, গোড়ালির উপর প্যান্ট পরা— এ রকম আরও বেশ কিছু আচরণে অস্বাভাবিকত্ব ঠেকেছিল তাঁর বন্ধুদেরও। তখন এটিএসের অফিসাররা দু’জন মনস্তত্ত্ববিদ, এক জন চিকিত্সক, এক জন মৌলানা এবং যুবকের মা ও পাঁচ বন্ধুর সাহায্য নেন। তিন সপ্তাহ ধরে এঁরা যুবকের কাউন্সেলিং করেন। তাঁকে বোঝানো হয় ইসলামের আসল অর্থ। এর পর এটিএসের অফিসাররা তাঁকে বেশ কিছু ভিডিও দেখান। ধর্মের নামে কী ভাবে তরুণ প্রজন্মের ব্রেনওয়াশ করছে আইএস, তা দেখানো হয়। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রের যে ১৭ জনকে আইএসের ফাঁদ থেকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তাঁদের অনুশোচনার কথাও শোনানো হয় ওই যুবককে।
ওই যুবককে নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরির কথাও ভাবছে এটিএস। সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র হবেন তিনিই। তাঁকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য ওই যুবক এটিএস অফিসারদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “ওই অফিসাররাই আমাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছেন।” মুসলিমদের নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টিকারী যে সব ভিডিও, লেখা বেরোচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও তিনি প্রচারে নামবেন। এর মধ্যে যে কোনও সত্যতা নেই, সেই বার্তাও দেবেন বলে জানিয়েছেন ওই যুবক।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy