Advertisement
E-Paper

রামভক্তদের ধূপ বেচেন আনোয়াররা, এখন তাঁদেরই অনেকে ঘরছাড়া

সে বার বাবরি মসজিদ ভাঙার পরে ঘর ছেড়েছিলেন। এ বার তিনি রয়ে গেলেও, পরিবারকে পাঠিয়ে দিয়েছেন অন্যত্র। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৪
উল্লাস: অযোধ্যার ধর্মসভায় যোগ দেওয়ার পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকেরা। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।

উল্লাস: অযোধ্যার ধর্মসভায় যোগ দেওয়ার পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকেরা। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।

আড়াই দশক অতিক্রান্ত। কিন্তু ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের সেই রূপ মনে পড়লে এখনও কেঁপে ওঠেন আনোয়ার। সে বার বাবরি মসজিদ ভাঙার পরে ঘর ছেড়েছিলেন। এ বার তিনি রয়ে গেলেও, পরিবারকে পাঠিয়ে দিয়েছেন অন্যত্র।

হনুমানগড়ী থেকে যে রাস্তাটি রামলালার দিকে বেঁকে গিয়েছে সেখানেই এক কোণে রামভক্তদের ফুল-ধূপ বিক্রি করেন আনোয়ার ও আরও বেশ ক’টি মুসলিম পরিবার। গত তিন দিন ধরে তা বন্ধ। প্রায় কুড়ি শতাংশ মুসলিমের বাস অযোধ্যায়। তার মধ্যে রাম জন্মভূমি সংলগ্ন নিউ বাজারে বেশ কয়েক ঘর মুসলিম রয়েছেন। মূলত তাঁদেরই আতঙ্ক বেশি। এঁদের জীবিকা আবর্তিত হয় রামলালাকে ঘিরে। আনোয়ার এমনই এক জন।

মাঝে ভালয়-মন্দয় কেটে গিয়েছে ২৬টি বছর। কিন্তু অযোধ্যায় আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ধর্ম সংসদ’-এর মহড়া দেখে পরিবারকে এখানে রাখার ঝুঁকি নেননি আনোয়ার। স্ত্রী-তিন সন্তান ও মা-কে পাঠিয়ে দিয়েছেন ১০ কিলোমিটার দূরে ফৈজাবাদে। বাড়ি বাইরে থেকে তালাবন্ধ। কথাবার্তা চলল জানলা দিয়েই। একই দশা প্রতিবেশী নুর মহম্মদ বা সাদিকদের। কেউ ভিটেমাটি আগলে রয়ে গিয়েছেন। কেউ এলাকা ছেড়েছেন।

আরও পড়ুন: গর্জাল, বর্ষাল না ধর্ম সংসদ

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ধর্ম সংসদ’-এর কারণে অযোধ্যার সাম্প্রদায়িক পরিবেশ নষ্ট হতে বসেছে বলে সরব হয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিশ-ই মুশাহরত। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলা সত্ত্বেও ভিএইচপি মন্দির গড়ার উদ্দেশ্যে জমায়েত ও সভা করছে— ওই অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে ওই সংগঠন। সংগঠনের প্রধান নাভিদ হামিদের কথায়, ‘‘স্থিতাবস্থা ভাঙার চেষ্টা হলে তা সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা হবে।’’ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফ্রায়েব জিলানি বলেছেন, ‘‘অযোধ্যার মুসলিমেরা প্রয়োজনে লখনউ চলে আসতে পারে। আমরা তাদের দায়িত্ব নেব।’’

আরও পড়ুন: ‘ভোট এক্সপ্রেসে’ রাজা উজির, রোষে মামা

যদিও সাম্প্রদায়িক অশান্তির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রামলালার চত্বরের দোকানি মদন গুপ্ত। তাঁর দাবি, ‘‘বাবরি ভাঙার সময়েও অযোধ্যায় মুসলিমেরা সুরক্ষিত ছিলেন। এ বারও থাকবেন। অযোধ্যার মুসলিমেরা রাম মন্দিরের পক্ষে।’’

তবে দুশ্চিন্তায় থাকলেও আনোয়ার বলছেন ‘‘কোথায় যাব! আমাদের রুটি-রুজির পিছনে তো রয়েছেন রামলালা ও রামভক্তরা।’’ শত অসুবিধাতেও তাই অযোধ্যা ছাড়ার কথা ভাবতে পারেন না তাঁরা।

Ayodhya Hindu Muslim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy