তাঁর বোন রুবাইয়াকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। জঙ্গিদের দেওয়া শর্ত অক্ষরে অক্ষরে মেনে নেওয়ায়, রুবাইয়াকে কয়েক দিনের মধ্যে ছেড়েও দেওয়া হয়। তার পর থেকে জল যত গড়িয়েছে ঝিলম দিয়ে, ততই রহস্য গাঢ় হয়েছে সেই অপহরণ ঘিরে। সত্যিই অপহরণ ছিল? নাকি জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নাটক সাজানো হয়েছিল? প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। রুবাইয়া এখন কাশ্মীরের বাইরে প্রায় লুকিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। কিন্তু দিদি মেহবুবা আর কয়েক দিনের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন।
১৯৮৯ সাল। দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে তখন টালমাটাল সময়। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ। কাশ্মীরি নেতা মুফতি মহম্মদ সইদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। তার বছর দু’য়েক আগেই কংগ্রেস ছেড়ে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহদের জনতা দলে এসেছেন মুফতি। ভিপি ক্যাবিনেটের হাত ধরে তিনি হলেন দেশের প্রথম মুসলিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পাঁচ দিন কাটার আগেই মুফতি মহম্মদ সইদের ছোট মেয়ে রুবাইয়া সইদকে অপহরণ করল জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ)। শর্ত দেওয়া হল, ওই জঙ্গি সংগঠনের পাঁচ জনকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী তখন মুফতির প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ফারুক আবদুল্লা। তিনি জানালেন, জঙ্গিদের কোনও শর্ত মানার প্রয়োজন নেই। মুফতি জনপ্রিয় নেতা। জম্মু-কাশ্মীর থেকে তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বসেছেন। জনমতের কথা মাথায় রেখে তাঁর মেয়ে রুবাইয়ার কোনও ক্ষতি করার সাহস পাবে না জেকেএলএফ। কিন্তু মুফতি নাছোড়। তাঁর বড় মেয়ে মেহবুবা মুফতিও নাছোড়। জঙ্গিদের শর্ত অবিলম্বে মেনে নিয়ে রুবাইয়াকে ছাড়াতে হবে। তাই হল শেষমেষ।