Advertisement
E-Paper

গুরু গোবিন্দের মঞ্চে মিললেন মোদী-নীতীশ

তিন বছর পরে এই প্রথম তাঁরা এক মঞ্চে। পাশাপাশি। এত দিন বিহার দেখেছে তাঁদের পারস্পরিক আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ। আজ পটনার গাঁধী ময়দান সাক্ষী হয়ে থাকল সেই দু’জনের পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৮
ফের কাছাকাছি। পটনার গাঁধী ময়দানে বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ছবি।

ফের কাছাকাছি। পটনার গাঁধী ময়দানে বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ছবি।

তিন বছর পরে এই প্রথম তাঁরা এক মঞ্চে। পাশাপাশি। এত দিন বিহার দেখেছে তাঁদের পারস্পরিক আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ। আজ পটনার গাঁধী ময়দান সাক্ষী হয়ে থাকল সেই দু’জনের পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানির। ইনি ওঁর প্রশংসা করেন, তো উনি এঁর। প্রায় পাল্লা দিয়ে পারস্পরিক প্রশস্তি। এক জন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অন্য জন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আর ওঁদের যিনি মেলালেন তিনি দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহ।

পটনায় গুরু গোবিন্দ সিংহের ৩৫০তম জন্মজয়ন্তী বর্ষের তিন দিন ব্যাপী সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে আজ গাঁধী ময়দানের মঞ্চে হাজির ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, নীতীশ কুমার, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রীর আগে ভাষণ দিতে উঠে নীতীশ বলেন, ‘‘মোদীজি এমন একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন যে রাজ্যের জন্ম থেকেই সেখানে মদ নিষিদ্ধ। উনি ১২ বছর সেখানে মুখ্যমন্ত্রী থেকে সেই নিষেধাজ্ঞার ধ্বজাকে তুলে ধরে রেখেছিলেন। সারা দেশে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি।’’ এর পরে মোদীও তাঁর ভাষণে নীতীশের ‘ড্রিম প্রোজেক্ট’, বিহারে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ঢালাও প্রশংসা করলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মদের বিরুদ্ধে নীতীশ কুমারের অভিযানকে আমি হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকেই সমর্থন করি। নীতীশজির এই আন্দোলনকে ‘জন-জন কা আন্দোলন’-এ রূপান্তর করতে প্রত্যেক দল, সামাজিক সংগঠন, প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।’’ তাঁর মতে, নীতীশজির নেতৃত্বে মদের বিরুদ্ধে বিহারের এই আন্দোলন সারা দেশের কাছেই উদাহরণস্বরূপ।

উল্লেখ্য, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে সারা দেশের সব বিরোধী দল যখন মোদীর বিরুদ্ধে এক কাট্টা, তখন ব্যতিক্রম ছিলেন নীতীশই। প্রথম দিন থেকে তিনি এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। মোদীর সুরে বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তে দেশের মানুষ লাভবান হবেন।’’ প্রধানমন্ত্রী তার জন্য নীতীশের কাছে বেঙ্গালুরুর জনসভায়, প্রকাশ্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার পরেও তিনি যে এই ‘সমর্থন’ ভোলেননি, তা আজ গাঁধী ময়দানে নীতীশকে পাশে বসিয়ে প্রমাণ দিলেন। তবে পিঠ চাপড়ানি তখনও শেষ হয়নি। আজকের এই অনুষ্ঠান সফল ভাবে রূপায়ণের জন্যও প্রধানমন্ত্রী নীতীশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নীতীশজি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে খুঁটিনাটি বিষয়ে যে নজর দিয়েছেন তা জানি।’’ বাদল তো তাঁর পুরনো এনডিএ সহকর্মীর প্রশংসায় এক ধাপ এগিয়ে বলেই ফেললেন, ‘‘আমিও হয়তো নীতীশজির মতো এত ভাল ভাবে এই আয়োজন করতে পারতাম না।’’

পঞ্জাব নির্বাচনের আগে গুরু গোবিন্দ সিংহের জন্মস্থান পটনায় এই ‘প্রকাশ পর্ব’ অনুষ্ঠানটি যে মোদী বা বাদলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বাদল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তাঁর ছেলে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদল এবং পুত্রবধূ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কৌর। প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্বে সব ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে গুরু গোবিন্দ সিংহের জন্মজয়ন্তী পালনের ব্যবস্থা করা হবে।

মঞ্চে ঠাঁই হল না লালুর

নীতীশের প্রশংসা করলেও নরেন্দ্র মোদী কিন্তু বিহারের শাসক জোটের অন্যতম প্রধান নেতা লালুপ্রসাদের সঙ্গে এক মঞ্চে বসলেন না। কেন্দ্রের সহায়তায় বিহার সরকারের পর্যটন দফতরের উদ্যোগেই গুরু গোবিন্দ সিংহের ৩৫০তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হল গাঁধী ময়দানে। বিহারের পর্যটন দফতরটি রয়েছে জোট শরিক আরজেডির হাতে। দফতরের তরফে মঞ্চে লালুপ্রসাদের জন্য আসন ছিল। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বিহারের দুই সদস্য, লোক জনশক্তি পার্টির রামবিলাস পাশোয়ান ও বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানান, ‘‘লালুপ্রসাদ আয়োজক কমিটিরও সদস্য নন। তবে কেন লালুকে মঞ্চে বসতে দেওয়া হবে!’’ প্রধানমন্ত্রীর দফতর আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে। তার পরেই মঞ্চে বসার কথা থাকলেও লালুপ্রসাদের চেয়ার সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে বসতে হয় নীচে, ভিভিআইপি দর্শকদের সঙ্গে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ লালু ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, নীতীশ কুমারের কাছে বিষয়টি নিয়ে তিনি অভিযোগ জানাবেন।

Modi Nitish
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy