নরেন্দ্র মোদীকে প্রণাম শুভেন্দু অধিকারীর।
শনিবার কলকাতায় ঝটিকা সফরে মাত্রই দু’বার তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং অধুনা দলত্যাগী নেতা। তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম সাক্ষাৎ হলেও শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে তিনি সব খবর রাখেন। নইলে কি আর যতবারই দেখা হোক, সস্নেহে ডাক পাড়েন, ‘‘আরে শুভেন্দু-উ-উ-উ…!’’
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যখন পৌঁছন, তখন তাঁকে স্বাগত জানাতে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ের সঙ্গে শুভেন্দুও। সকলকে নমস্কার করে এগোতে এগোতে মোদী আচমকাই শুভেন্দুর সামনে এসে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন। সস্নেহে তরুণ নেতার কাঁধে হাত রাখেন। শুভেন্দুও হাতজোড় করে নমস্কার করেই সামনে ঝুঁকে অবাঙালি কায়দায় মোদীর হাঁটু ছুঁয়ে প্রণাম করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, স্মিত হেসে প্রধানমন্ত্রী শুভেন্দুকে বলেন, ‘‘শুভেন্দু-উ-উ-উ…। তুম আচ্ছা কাম কর রহে হো। হমে সব খবর হ্যায়।’’ শুভেন্দুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানের শেষে চা চক্রে। বিভিন্ন টেবিলে বসেছিলেন অভ্যাগতরা। প্রধানমন্ত্রী সব টেবিলের সামনে গিয়ে হাতজোড় করে নমস্কার করেন। তিনি বেলুড় মঠের কয়েক জন মহারাজ এবং শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী এর পর আরও একটি টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। ঘটনাচক্রে, সেখানেই বসেছিলেন সাদা কুর্তা-পাজামার উপর সবজেটে মোদী জ্যাকেট পরা শুভেন্দু। বেশি বাক্যব্যয় করেননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবার সস্নেহে হাঁক পাড়েন, ‘‘শুভেন্দু-উ-উ-উ…।’’ তার পর এগিয়ে যান পরের টেবিলের দিকে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সস্নেহ সম্ভাষণ পেলেও তাঁর প্রাক্তন দলনেত্রী কিন্তু এড়িয়েই গিয়েছেন শুভেন্দুকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সহকর্মীকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুকুলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত কুশল বিনিময় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মমতা উপেক্ষা করলেও শুভেন্দু অবশ্য গদগদ। কারণ, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হল প্রধানমন্ত্রী মোদীর। যাঁকে প্রতিটি সভায় শুভেন্দু ‘যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’ বলে উল্লেখ করে থাকেন। ঘটনাচক্রে, তৃণমূল ছাড়ার পর শুভেন্দু এই প্রথম মুখোমুখি হলেন মমতার। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে জল্পনা ছিল, দলবদলের আগে শুভেন্দু দিল্লি যাবেন। সেখানেই যোগ দেবেন বিজেপি-তে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভায় বিজেপি-তে যোগ দেন। তবে শনিবার প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে শুভেন্দুকে সস্নেহ সম্ভাষণ করেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে, তিনি শুভেন্দুর কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাতে শুভেন্দুর অভিভূত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যা ঘনিষ্ঠ মহলে গোপনও করেননি এই তরুণ নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy