নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে অলিম্পিক্সে ভারতীয় হকি দলের ব্রোঞ্জ জয়। অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ আর রাম মন্দির তৈরির পথে প্রথম পদক্ষেপ। যোগসূত্র একটি দিন, ৫ অগস্ট। সেই সূত্রেই তিনটি বিষয়কে মেলালেন নরেন্দ্র মোদী।
আজ উত্তরপ্রদেশে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’য় উপকৃত বাসিন্দাদের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে মোদী বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে ভারতের জয় শুরু হয়েছে। তাতে ৫ অগস্ট দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ধরে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।’’
তাঁর বক্তব্য, ‘‘দু’বছর আগে ৫ অগস্টই এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের স্বপ্নকে শক্তিশালী করেছিল দেশ। ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদের ফলে সাত দশক পরে জম্মু-কাশ্মীরের প্রত্যেক বাসিন্দা সব অধিকার ও সুবিধে ভোগ করার অধিকার পেয়েছিলেন। আবার গত বছরের ৫ অগস্ট রাম মন্দির তৈরির পথে প্রথম পদক্ষেপ করেছিলেন কোটি কোটি দেশবাসী। আবার ৫ অগস্টেই দেশের তরুণ প্রজন্ম হকিতে ভারতের গর্বের স্থান ফিরিয়ে আনার পথে বড় পদক্ষেপ করেছে।’’
তবে প্রধানমন্ত্রী থেকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পর্যন্ত ‘নতুন কাশ্মীর’-এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও উপত্যকার পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। আজ, বিশেষ মর্যাদা লোপের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে কোনও হরতালের ডাক ছাড়াই খাস রাজধানী শ্রীনগরে বন্ধ রইল দোকানপাট, ব্যাহত হল জনজীবন। বিক্ষোভ দেখাল বিরোধী দল পিডিপি। তবে কোনও হিংসার খবর পাওয়া যায়নি।
আজ লাল চক-সহ শ্রীনগরের বেশ কয়েকটি অংশে দোকানপাট বন্ধ ছিল। কয়েকটি এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে জোর করে দোকান খোলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ ও মধ্য কাশ্মীরের বদগাম, গান্ডেরবাল ও উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারার কয়েকটি অংশে দোকানপাট খোলা ছিল।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ কাশ্মীরে হরতালের ডাক দেয়নি কোনও সংগঠন। হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির নাম-সহ হরতালের ডাক দিয়ে একটি চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ালেও তা ভুয়ো বলে জানিয়েছে পুলিশই। উপত্যকার রাজনীতিকদের মতে, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন উপত্যকার বাসিন্দাদের একাংশ।
আজ সকালে শ্রীনগরের রেসিডেন্সি রোড পর্যন্ত একটি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে এই দিনটিতে জম্মু-কাশ্মীরকে যে যন্ত্রণার মধ্যে ফেলা হয়েছিল তা বোঝাতে কোনও শব্দ বা ছবিই যথেষ্ট নয়।’’
পরে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে বৈঠকে বসেন বিরোধী গুপকর জোটের নেতারা। সেই বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের ‘ন্যায্য অধিকার’ রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পরে সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি বলেন, ‘‘বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে কাশ্মীরে হিংসা বন্ধ হবে ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে বলে দাবি করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু উল্টে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। সম্প্রতি সংসদে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রই জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো হবে। বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি অস্বাভাবিকই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy