Advertisement
E-Paper

মৈত্রীর সুরেই মোদীর বার্তা চিনকে

তাইওয়ান এবং তিব্বত– চিনের দু’টি স্পর্শকাতর ক্ষেত্র। ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রশ্নে, কিংবা কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে বা কমাতে ভারত বরাবরই এই দু’টি বিষয়কে কাজে লাগিয়ে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৪
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংঘাত নয়, বেজিংয়ের সঙ্গে আঞ্চলিক এবং দ্বিপাক্ষিক প্রশ্নে আপাতত মৈত্রীর পথেই এগোতে চাইছে নয়াদিল্লি। তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়ায় চিনকে এমনই বার্তা দিলেন নরেন্দ্র মোদী।

তাইওয়ান এবং তিব্বত– চিনের দু’টি স্পর্শকাতর ক্ষেত্র। ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রশ্নে, কিংবা কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে বা কমাতে ভারত বরাবরই এই দু’টি বিষয়কে কাজে লাগিয়ে এসেছে। মোদী সরকারের প্রথম ইনিংসে শুধু নয়, মনমোহন সিংহ সরকারেরও সময়েও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু চলতি হংকং-বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে খুবই সাবধানে বিষয়টি দেখছে সাউথ ব্লক। যা সরাসরি চিন-বিরোধী, এখনও পর্যন্ত আগ বাড়িয়ে এমন একটি পদক্ষেপও করা হয়নি। বরং সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের পরে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের মঞ্চেও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে মোদীর যা-যা কথা হয়েছে, তাতে পারষ্পরিক ভরসার সুরই স্পষ্ট।

সূত্রের খবর, সেখানে হংকংয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে দু’পক্ষে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, হংকং প্রশ্নে বেজিংয়ের পাশেই থাকছে তারা। বেজিংয়ে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিস্রী সম্প্রতিই দেখা করেছেন হংকংয়ের প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি লামের সঙ্গে। পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে কথা হয়েছে দু’জনের।

বহু বছর ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল হংকং। ২২ বছর আগে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় চিনের কাছে। তার পর থেকে স্বশাসিত এই অঞ্চলের মূল কর্তৃত্ব বেজিংয়ের হাতে। অথচ হংকংয়ের একটা বড় অংশ চিনের ‘দাদাগিরি’ মানতে নারাজ। জুনের মাঝামাঝি থেকে পারদ চড়ছে। প্রথমে হংকংয়ের প্রস্তাবিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলের বিরোধিতায় হংকংয়ের রাস্তায় নামেন লক্ষ-লক্ষ মানুষ। চাপের মুখে আপাতত সেই বিল স্থগিত রাখার কথা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ল্যাম। কার্যত ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু শান্তি ফেরেনি। ১ জুলাই চিনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ২২তম বর্ষপূর্তিতে ফের উত্তাপ ছড়ায়।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জি-২০ গোষ্ঠীভূক্ত দেশগুলির হংকংয়ে অবস্থিত দূতাবাসে গিয়ে প্রতিবাদকারীরা ধর্নাও দিয়েছেন। তখন জাপানের ওসাকায় ওই গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন চলছিল (২৮ এবং ২৯ জুন)। শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন যাতে ওই রাষ্ট্রনেতারা বেজিংয়ের উপর মিলিত ভাবে চাপ তৈরি করেন, সেটাই মূল দাবি ছিল হংকংবাসীর। এবং তা মেনে তৎক্ষণাৎ আমেরিকা এবং ব্রিটেন-সহ চোদ্দটি জি-২০ ভুক্ত দেশ হংকংয়ের পরিস্থিতি যাচাই করতে তাদের দূত পাঠায়।

ভারত কিন্তু কাউকেই পাঠায়নি। বরং হংকং-চিনের দ্বন্দ্বে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করেই রেখেছিল। গত শুক্রবার বিক্রম মিস্রী সেখানে গিয়েও কিন্তু প্রতিবাদী মানুষের বক্তব্য শোনেননি। বরং তিনি কথা বলেন চিনের অনুগত হিসেবে পরিচিত প্রশাসক ল্যামের সঙ্গে। প্রত্যপর্ণ বিলের বিরোধিতার সময় থেকেই যাঁকে সরানোর দাবি উঠেছে হংকংয়ে।

হংকং চিনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ পর্যন্ত অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে চিন প্রশাসন। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিল ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেন হংকংবাসীর একাংশ। জটিলতা এখনও কাটেনি। হংকংয়ের প্রত্যর্পণ আইনে ক্যারি যে বদল আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে ছিল— কোনও অপরাধীকে মামলার প্রয়োজনে অন্য দেশের হাতে প্রত্যর্পণ করা যাবে। এই দেশগুলির মধ্যে যে হেতু চিনও রয়েছে, তাই গোড়াতেই এ নিয়ে আপত্তি তোলেন সাধারণ হংকংবাসী। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই আইন পাশ হলে ফের দাদাগিরি শুরু করবে চিন।

Narendra Modi India China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy