মরণাপন্ন রোগীর কানে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হোক বা করোনা রুখতে ইউনানি ওষুধের সুপারিশ, চিকিৎসা ব্যবস্থায় নিজেদের মর্জি মাফিক পরিবর্তন আনতে গিয়ে গত কয়েক বছরে বার বার সমালোচিত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বার আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের অস্ত্রোপচারে ছাড়পত্র দিয়ে ফের একবার তোপের মুখে কেন্দ্র। তাদের এই সিদ্ধান্তে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যত ‘জগাখিচুড়ি’ হয়ে দাঁড়াবে বলে মত ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর। প্রয়োজনীয় শিক্ষা সম্পূর্ণ না করে যত্রতত্র ‘হাইব্রিড’ চিকিৎসক মাথাচাড়া দিলে, রোগীদের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের অস্ত্রোপচারে ছাড়পত্র দিতে ২০১৬-র আয়ুর্বেদ স্নাতকোত্তর শিক্ষা আইনে সংশোধন ঘটিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯ নভেম্বর সেই মর্মে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তারা জানায়, স্নাতকোত্তর স্তরে শল্য (সাধারণ অস্ত্রোপচার) এবং শালাক্য (কান, নাক, গলা, চোখ, মাথা, হাড় এবং দাঁতের অস্ত্রোপচার) চিকিৎসায় অস্ত্রোপচারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ‘শল্য এবং শালাক্য চিকিৎসায় স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের হাতে ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে শিক্ষা সম্পূর্ণ হলে স্বাধীন ভাবে অস্ত্রোপচার করতে পারেন তাঁরা’।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, শল্য চিকিৎসার আওতায় অঙ্গচ্ছেদ, স্কিন গ্রাফটিং, ল্যাপারোটোমি এবং অ্যাডভান্সড গ্যাস্ট্রো-ইনটেসটিনাল অস্ত্রোপচার করতে পারবেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা। শালাক্য চিকিৎসার আওতায় চোখের ছানি কাটা, চোখের মণির জায়গা বদলের মতো অস্ত্রোপচার করতে পারবেন। ইচ্ছা মতো বিষয় বেছে নিতে পারবেন তাঁরা। যাঁরা শিক্ষা সম্পূর্ণ করবেন, তাঁরা এমএস (আয়ুর্বেদ) শল্যতন্ত্র এবং এমএস (আয়ুর্বেদ) শালাক্যতন্ত্র উপাধি পাবেন।