ফাইল চিত্র।
তিনি ধর্মেও আছেন। বাজেটেও আছেন!
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আগে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বারাণসীতে গঙ্গাস্নান, কাশী বিশ্বনাথ ধামে পুজোআচ্চা দেখে প্রশ্ন উঠেছিল, তিনি কি আর্থিক সংস্কার শিকেয় তুলে নিখাদ হিন্দুত্বের রাজনীতিতে মন দিলেন! বিরোধীরা বলছিলেন, অর্থনীতি এখনও রসাতলে। ছোট এবং মাঝারি শিল্প মার খাচ্ছে। চাকরি, রোজগার কমছে। বাড়ছে শুধু মূল্যবৃদ্ধি।
কার্যত সমালোচকদের জবাবেই আজ প্রধানমন্ত্রী দেশ-বিদেশের বেসরকারি লগ্নি সংস্থা, নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন। তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, দেশে আরও লগ্নি টানতে আরও কী কী সংস্কার করা উচিত। কী ভাবে ব্যবসার পরিবেশ আরও সহজ করে তোলা সম্ভব। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৃহস্পতিবার থেকেই আগামী বছরের বাজেটের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন। আজ প্রধানমন্ত্রীও বাজেটের দিকে চোখ রেখেই লগ্নিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের বক্তব্য, “এই বৈঠক থেকে স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী নিজেই শিল্পমহল ও লগ্নিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে আগামী বাজেটের জন্য মতামত সংগ্রহ করছেন।”
তিন কৃষি আইন এনেও কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের মুখে আইন প্রত্যাহার করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আজ বণিকসভা ফিকি-র বার্ষিক সভায় শিল্পমহলের সামনে কার্যত সে দিকেই ইঙ্গিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ভুল স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, দু’একটি সিদ্ধান্ত ভুল হলেও তার উদ্দেশ্য ভুল ছিল না। খুব শীঘ্রই আর্থিক বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ ছাপিয়ে যাবে দাবি করে শাহ বলেন, “গত সাত বছরে একটিও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেনি। আমরা অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটা, দু’টো সিদ্ধান্ত হয়তো ভুল হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমালোচকরাও বলতে পারবে না তার পিছনে উদ্দেশ্য খারাপ ছিল।”
কৃষি আইন প্রত্যাহার করলেও আজ প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি লগ্নি সংস্থা (প্রাইভেট ইক্যুইটি) বা নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগকারী (ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট)-দের কৃষি ক্ষেত্রে স্টার্ট-আপে লগ্নি করার ডাক দিয়েছেন। বৈঠকের পরে আ্যাক্সেল ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টের প্রশান্ত প্রকাশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষি স্টার্ট-আপ, খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থায় লগ্নির কথা বলেছেন। তাঁর লক্ষ্য চাষিদের আয় দ্বিগুণ করা ও ২০২৫-এর মধ্যে অর্থনীতির বহরকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া। এইচডিএফসি-র বিপুল রুংতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সাধ্যের মধ্যে আবাসনে লগ্নিতে জোর দিয়েছেন।
বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে শিল্পমহল আরও সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করেছিল। আজ তাঁর কাছে রফতানিকারীদের সংগঠন ‘ফিও’ দাবি করেছে, ভারত নিজের জাহাজ সংস্থা চালু করুক। কোভিডের সময়ে যে ভাবে আন্তর্জাতিক জোগান ব্যবস্থায় ধাক্কা লেগেছে, তাতে ভারতের রফতানি মার খেয়েছে। ভারতের নিজস্ব জাহাজ সংস্থা বা শিপিং লাইনের কথা ভাবা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy