জাপান সফরের শেষ দিনে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বুলেট ট্রেনে যাত্রা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টোকিয়ো থেকে সেনদাই— এই সফরে ভারতের বুলেট ট্রেনকে ঘিরে দীর্ঘমেয়াদী স্বপ্নকে ফের উস্কে দিলেন মোদী, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যাত্রাপথে ইশিবাকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ব জাপান রেলওয়ে কোম্পানির আধুনিক বুলেট ট্রেন পরিষেবা ও প্রযুক্তি দেখেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে মোদী দেখা করেন জাপানে প্রশিক্ষণরত ভারতীয় ট্রেন চালকদের সঙ্গে। ভবিষ্যতে ভারতীয় বুলেট ট্রেন পরিষেবার জন্য এই চালকরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
ইশিবা তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এই সফরের ছবি নিয়ে লেখেন— “প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সেনদাই যাচ্ছি। গত রাত থেকে আজ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি।” মিয়াগি প্রিফেকচারের সেনদাইয়ের কাছে সেমিকন্ডাক্টর কারখানাও পরিদর্শন করেছেন মোদী। সেনদাই কেন্দ্রীয় শিল্প পার্কে এই কারখানাটি জাপানের দেশীয় চিপ তৈরির শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার সবচেয়ে বড় প্রচেষ্টার অন্যতম। এই সফরে সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স খাতে সহযোগিতাকে ভারত-জাপান সম্পর্কের অন্যতম বড় ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরেছেন মোদী। টোকিয়ো ইলেকট্রন নামের ওই শীর্ষস্থানীয় সংস্থাটির ‘প্রোডাকশন ইনোভেশন ল্যাব’ ঘুরে দেখেন তিনি, সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মোদীর কথায়, “সেমিকন্ডাক্টর আগামী দিনের প্রযুক্তির মেরুদণ্ড। জাপানের সঙ্গে যৌথ ভাবে আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে চাই।”
এ দিনই টোকিয়োয় মোদী জাপানের ১৬টি প্রিফেকচারের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও জাপানের প্রিফেকচার স্তরের মধ্যে সরাসরি সহযোগিতার সম্ভাবনায় জোর দেন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল জানান, এই সহযোগিতার জন্য ইতিমধ্যেই ভারত-জাপান বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ উদ্যোগ হয়েছে। মোদীর কথায়, “বাণিজ্য, উদ্ভাবন, উদ্যোগ, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–সহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের রাজ্য ও প্রিফেকচারের মধ্যে সহযোগিতার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তির কেন্দ্রগুলিতে যৌথ কাজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।” জাপানের গভর্নররাও একমত হন যে, এই ধরনের আঞ্চলিক সহযোগিতা দুই দেশের ব্যবসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। ভারতের রাজ্যগুলিকেও তাঁরা আমন্ত্রণ জানান যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগের জন্য। ইশিবা এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে প্রতিরক্ষা এবং অর্থনীতি-সহবিস্তৃত ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)