Advertisement
E-Paper

নীরব হাওয়াই ঝড় হলো মোদীর নামে

সকাল তখন সাড়ে আটটা। লখনউয়ে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চমকে দিলেন অবধেশ মিশ্র। এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সিতে উঠেই প্রশ্নটা করেছিলাম। কারা জিতবে? ট্যাক্সির মালিক অবধেশের এক কথায় জবাব— মোদী।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০৪:১৫

সকাল তখন সাড়ে আটটা। লখনউয়ে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চমকে দিলেন অবধেশ মিশ্র। এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সিতে উঠেই প্রশ্নটা করেছিলাম। কারা জিতবে? ট্যাক্সির মালিক অবধেশের এক কথায় জবাব— মোদী।

তখনও ভোট গোনা শুরু হয়নি। প্রথম রাউন্ডে কে কত আসনে এগিয়ে, তা-ও অজানা। ব্রাহ্মণ-সন্তান অবধেশ যুক্তি দিলেন, “অনেক জাত-পাত হল। এ বার মোদীকে সুযোগ দিয়ে দেখাই যাক না, কেমন কাজ করেন।” রাস্তার উপরে নির্মীয়মাণ মেট্রোর লাইন। অখিলেশ যাদবের ‘কাম বোলতা হ্যায়’-এর অন্যতম অভিজ্ঞান। অখিলেশ কি কাজ করেননি? অবধেশের উত্তর, “সব কাজই তো লখনউয়ের মধ্যে। তার বাইরে উত্তরপ্রদেশ সেই পিছিয়ে।”

ঘণ্টা দেড়েক পরে যখন হজরতগঞ্জে হোটেলমালিক মোহিত সিংহের সঙ্গে কথা হচ্ছে, তখন সপা-কংগ্রেস জোটকে পিছনে ফেলে বিজেপি এগোতে শুরু করেছে। মোহিত বললেন, “সমাজবাদী পার্টির নজর আসলে সমাজের একটা নির্দিষ্ট অংশের মন জেতার মধ্যেই আটকে গেল। মায়াবতী এলেও তা-ই করবেন, সকলে জানে। মোদীর পক্ষে নীরবেই একটা হাওয়া তৈরি হচ্ছিল।”

আমোদিত: বিজেপির জয়ের খবরে আনন্দে ফেটে পড়েছেন সমর্থকরা। নয়াদিল্লিতে শনিবার দলের সদর দফতরের বাইরে। ছবি: রয়টার্স।

পদ্মপাতার এই হাওয়া যে ঝড়ের মতো উত্তরপ্রদেশকে হোলির আগেই গেরুয়া আবিরে রাঙিয়ে দেবে, তা বিজেপি নেতারাও সবটা টের পাননি। নেতা-সমর্থকরা সেজেগুজে পৌঁছনোর আগেই বিজেপি ২০০ ছুঁইছুঁই। তার পর থেকে বিধানসভা মার্গে বিজেপির দফতরে একটাই রব— মো-দী...মো-দী...মো-দী!

মনে পড়ল, অবধেশ-মোহিতরাও মোদীরই জয় চাইছিলেন। তা হলে কি উত্তরপ্রদেশ জাত-পাত ভুলে উন্নয়নের রাজনীতিতে নাম লেখাল? কিন্তু এ বারের ভোটে মোদী তো মেরুকরণের তাস বড় কম খেলেননি! কিন্তু দিনের শেষে উন্নয়নের মোড়কে অ-যাদব, অ-জাঠ অনগ্রসর শ্রেণির সঙ্গে ব্রাহ্মণ-ঠাকুরের উচ্চবর্ণের মিশেলে এমন এক দাওয়াই পেশ করলেন মোদী-অমিত, যাতে নোট- কালিমাও ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেল?

আরও পড়ুন: মোদীর উত্তর

শীতের লখনউতেও দেখেছি, আমিনাবাদের কাবাব-রেস্তোঁরার মালিক থেকে হজরতগঞ্জের চিকনের ব্যবসায়ীরা মাছি তাড়াচ্ছেন। নগদের অভাবে ব্যবসা মার খাচ্ছে বলে গজগজ করছেন আবদুল ওয়াহিদ, খালিদ আনসারিরা। কোনও মুসলিম প্রার্থী না দিয়েও বিজেপি চার ভাগের তিন ভাগ আসন জেতার পর আবদুল-খালিদরা আশা করছেন, “মোদী উন্নয়নের কাজ করলে ভালই। ব্যবসা বাড়লে, গুন্ডাগিরি কমলে সকলেরই দিল খুশ।” অন্য একটা ভয় অবশ্য থেকেই যায়। বিজেপি ৩০০ ছুঁয়ে ফেলার পর গেরুয়া আবির মাখা মুখগুলো যে ভাবে ‘এক হি নারা, এক হি নাম, জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান তুলল, তাতে মনে হতে বাধ্য, রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হল বলে। কিন্তু লখনউয়ের মনের কথা হল, সে উন্নয়ন চায়। গরিব প্রদেশের রাজধানী হয়ে থাকা তার না পসন্দ।

তখতে কাকে দেখতে চায় লখনউ? উত্তর মিলল, যে কেউ। নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে শুধু মোদীর কথা মতো উন্নয়নের কাজ করলেই হবে!

Narendra Modi Assembly election 2017 BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy