Advertisement
E-Paper

রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা আজ থেকে

প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে তাঁর বিদেশনীতি। তাই দেশের কূটনৈতিক কাঠামোয় কিছু মাজাঘষা দরকার বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে কারণে আগামী কাল থেকে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবেন তিনি।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০৩:৪৮

প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে তাঁর বিদেশনীতি। তাই দেশের কূটনৈতিক কাঠামোয় কিছু মাজাঘষা দরকার বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে কারণে আগামী কাল থেকে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, বৈঠকে রাষ্ট্রদূতদের আরও বেশি সক্রিয় হতে বলবেন ভিন্ রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছনোর প্রশ্নে। প্রয়োজনে আমলাদের রদবদল ঘটাতে হবে— এই মর্মেও বার্তা দিতে পারেন মোদী।

তবে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বসার আগে বিদেশনীতির প্রশ্নে বিজেপি ও সঙ্ঘের অবস্থানও ঝালিয়ে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। যে কারণে আজ তিনি বিজেপির ‘বিদেশ বিষয়ক সেল’-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁদের কাছ থেকে জেনে নেন, সরকারের বিদেশনীতি সম্পর্কে সঙ্ঘ পরিবারের নেতাদের প্রত্যাশা ঠিক কেমন, পরামর্শগুলিই বা কী।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, গত তিন বছরে বিদেশনীতির প্রশ্নে সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারি মোদী সরকারের। তা সে চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাই হোক বা পাকিস্তানের মোকাবিলা। এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে আফ্রিকা— সর্বত্র নিঃশ্বাস ফেলছে ড্রাগন। ট্রাম্প জমানায় এখন দিল্লির আমেরিকা-নীতিও দোদুল্যমান। বিভিন্ন বিষয়ে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না ইউরোপকেও।

এমন অবস্থায় মোদী চাইছেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রে নিজেদের দূতাবাসকে আরও বেশি লক্ষ্যমুখী করে তুলতে। যাতে ভারতীয় নীতির দ্রুত ও ঠিকঠাক প্রতিফলন ঘটে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আমলা কত দিন চাকরি করেছেন, সেটিকে বিবেচ্য না করে দক্ষতা ও কাজের রেকর্ডকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: আয়কর দফতরের এ বার নিশানায় বেনামি সম্পত্তি

সূত্রের খবর, আপাতত প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে কয়েক জন প্রবীন অফিসারকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাছাই করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যুগ্মসচিব বিনয় কোয়াত্রাকে জুলাইয়ে ফ্রান্সে পাঠানো হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির দুই সচিব গায়ত্রী কুমার এবং বেনু রাজামনি যাচ্ছেন যথাক্রমে ব্রাসেলস এবং হেগ-এ।

কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, মোদীর এই নীতি নিয়েই। কোনও দেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি বা উন্নতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূতের কতটা ভূমিকা থাকে, বিতর্ক রয়েছে তা নিয়েও। কর্মরত এক হাইকমিশনারের কথায়, ‘‘কোনও বড় গোলমাল হলে রাষ্ট্রদূতকেই কাঠগড়ায় তোলার রেওয়াজ রয়েছে!’’ প্রাক্তন বিদেশসচিব কনওয়াল সিবল বলছেন, ‘‘এক জন রাষ্ট্রদূত ভারতীয় বিদেশনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারেন তাঁর পরামর্শ এবং প্রস্তাব দিয়ে। তার বেশি নয়। তিনি নিজের দেশের নীতি নির্ধারণের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সেটা সংশ্লিষ্ট দেশের রাজনৈতিক অভিমুখের উপরই নির্ভর করে।’’

আমেরিকায় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন রনেন সেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটা ঠিকই যে রাষ্ট্রদূতের একটি সীমাবদ্ধ ভূমিকা থাকে। তাঁকে বিদেশি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক মতিগতি বুঝতে হয়, দেশের বিনিয়োগের জন্য তদ্বির করতে হয়, নাগরিক সমাজ এবং সংবাদমাধ্যম কী চাইছে, তার মূল্যায়ন করতে হয়, দেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত যাকে যেখানে পাঠানো হচ্ছে তাঁর জন্য একটি সুস্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করে দেওয়া।’’ পেশাদার আমলার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরও (‌যেমন কৃষ্ণ মেনন, বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত, ডি পি ধর) রাষ্ট্রদূত করে পাঠানোর রেওয়াজ সুপ্রাচীন। রণেনের মতে, ‘‘কোন দেশে ভারতের কি অগ্রাধিকার, সেটা বিবেচনা করে রাষ্ট্রদূত বাছা উচিত।’’

Narendra Modi External Affairs International Affairs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy