উৎসবের মরসুমে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আরও তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ডিএ বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন পেনশনভোগীরা।
চলতি বছরের শুরুতেই দুই শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। গত মার্চ মাস থেকে নতুন হারে ডিএ কার্যকর হয়। তার পরে আবার ডিএ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। চলতি বছরের জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীদের ওই হারে ডিএ দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, দেশের ১.২ কোটি সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীরা সুবিধা পাবেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। এ বার তা বেড়ে ৫৮ শতাংশে দাঁড়াল।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বছরে দু’বার ডিএ বৃদ্ধি পেয়ে থাকেন। জানুয়ারি এবং জুলাই মাসে ডিএ পান সরকারি কর্মীরা। উল্লেখ্য, যেহেতু জুলাই মাস থেকে নতুন হারের ডিএ পাবেন বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র, সেহেতু গত তিন মাসের ডিএ একসঙ্গে অক্টোবরের বেতনের সঙ্গে পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। পেনশনভোগীদের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।
কী ভাবে ডিএ হিসাব হয়? ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই)-এর উপর ভিত্তি করে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির হিসাব করে কেন্দ্র। সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় এই তিন শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করা হল। চলতি বছরের শুরুতেই অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তবে তা এখনও কার্যকর হয়নি। ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে সপ্তম বেতন কমিশনের মেয়াদ। অর্থাৎ, এটাই সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় শেষ বার ডিএ বৃদ্ধি করল কেন্দ্র।
বকেয়া এবং কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবিতে এ রাজ্যে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। বর্তমানে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। মামলাকারীদের দাবি, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছে তাঁদের প্রাপ্য থেকে। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাচ্ছেন না তাঁরা। যদিও রাজ্যের যুক্তি, এ রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ থেকে বঞ্চিত করা হয় না। তবে রাজ্যের সামর্থ্য অনুযায়ী ডিএ দেওয়া হয়। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩০৯ অনুযায়ী প্রত্যেক রাজ্যের অধিকার রয়েছে নিজেদের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ করার। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার যে ডিএ নীতি নিয়েছে, তা অনুসরণ করতে বাধ্য নয় কোনও রাজ্য।
আরও পড়ুন:
ডিএ নিয়ে রাজ্যে ডামাডোলের মধ্যে আবার এক বার মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করল কেন্দ্র। ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ফারাক আরও বাড়ল। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঙ্গে কেন্দ্রের ডিএ-র ফারাক অনেকটাই ছিল। আজ কেন্দ্র আবার তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করতে সেই ফারাক আরও বেড়ে গেল। বর্তমান রাজ্য সরকার কি তার কর্মচারীদের প্রতি বিন্দুমাত্র দয়ামায়া দেখাবে না? আমাদের দাবি, অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করুক সরকার।’’ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ -র ফারাকের কথাও তুলে ধরেন তিনি।