Advertisement
E-Paper

‘কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেল গুলি!’ আক্ষরিক অর্থেই একচুলের জন্য বাঁচল পহেলগাঁও ঘুরতে যাওয়া কর্নাটকের পরিবার

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় ২৬ জনের মৃত্যু হলেও অলৌকিক ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন কর্নাটকের পরিবারের তিন সদস্য। কী ভাবে? সেই গল্পই শুনিয়েছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২০
কর্নাটকের সেই পরিবার।

কর্নাটকের সেই পরিবার। ছবি: সংগৃহীত।

একচুলের জন্য বেঁচে গেলেন বাবা-মা-ছেলে! আক্ষরিক অর্থেই। গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় ২৬ জনের মৃত্যু হলেও অলৌকিক ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন কর্নাটকের পরিবারের তিন সদস্য। কী ভাবে? সেই গল্পই শুনিয়েছেন তাঁরা।

এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে জম্মু-কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল কর্নাটকের হেগড়ে পরিবার। সেইমতো গত ২১ এপ্রিল শ্রীনগরে পৌঁছোন প্রদীপ হেগড়ে, স্ত্রী শুভা এবং তাঁদের ছেলে সিদ্ধান্ত। পর দিন সকালে পহেলগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। গন্তব্য ছিল সবুজে ঘেরা বৈসরন উপত্যকা, যা ‘মিনি সুইৎজ়ারল্যান্ড’ নামেই বেশি পরিচিত। প্রদীপের কথায়, ‘‘আমরা তিনটি ঘোড়া ভাড়া করেছিলাম। কারণ একেই এবড়োখেবড়ো রাস্তা, তার উপর বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা কর্দমাক্ত এবং পিচ্ছিল ছিল। উপরে পৌঁছোতে আমাদের ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট সময় লাগে।’’

প্রদীপ জানিয়েছেন, তাঁরা যখন ভিতরে ঢোকেন, তখন গোটা এলাকাতেই ছিল পর্যটকদের ভিড়। প্রবেশপথের ডান দিকে, যেখানে জ়িপলাইন শুরু হয়, সেখানে একটি ফাঁকা জায়গা রয়েছে। প্রদীপেরা ভেবেছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু ক্ষণ ছবি তুলবেন। এর পর সেখানেই প্রায় এক ঘণ্টা কাটিয়ে ফেলেন তাঁরা। দুপুর পৌনে ২টোর দিকে তাঁরা বৈসরনের মূল আকর্ষণকেন্দ্র, যেখানে বেশ কিছু অ্যাডভেঞ্চার রাইড, খাবারের স্টল ও দোকান রয়েছে, সেখানে যাবেন বলে মনস্থির করেন। প্রসঙ্গত, ওই জায়গাতেই জঙ্গিদের হাতে প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জনের। কিন্তু প্রদীপের ছেলে সিদ্ধান্ত জানায়, তার খিদে পেয়েছে। বাবা-মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তাঁরা ফেরার পথে খাবার খাবেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা ছেলের বায়নায় শেষমেশ একটি খাবারের দোকানে গিয়ে ম্যাগি অর্ডার করেন তাঁরা।

হঠাৎ দূরে গুলি চলার শব্দ হয়। এর প্রায় ১৫-২০ সেকেন্ড পরেই বন্দুকধারী দুই যুবককে আসতে দেখেন তাঁরা। একটানা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতে আসছিল তারা। প্রদীপের কথায়, ‘‘প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে পড়ি। ঠিক সেই মুহূর্তে, আমার স্ত্রী আমার ব্যাগটি নেওয়ার কথা ভাবেন, যা টেবিলের উপর ছিল। আমাদের পরিচয়পত্র, ফোন— সব ওই ব্যাগেই ছিল। ব্যাগ নেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই শুভার কান ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে যায়।’’ ওই মহিলা বলেন, ‘‘ব্যাগটি নিতে যখন আমি উঠে দাঁড়াই, তখন কিছু একটা চুলে লেগেছিল। প্রথমে বুঝতে পারিনি যে সেটি একটি গুলি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে ঘুরে দেখলাম, গুলিটি মাটিতে গিয়ে আঘাত হানল। এখন ভাবলেও শিউরে উঠছি, তখন কেন আমি উঠে দাঁড়িয়েছিলাম! ঈশ্বরই আমাকে বাঁচিয়েছেন।’’

এর পর প্রদীপেরা গেটের দিকে দৌড়তে শুরু করেন। বেরোনোর পরেও তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না কোন পথে যাবেন। এ ভাবে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার দৌড়নোর পর তাঁরা তাঁদের ঘোড়সওয়ারকে একটি গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে দেখেন। তিনিই প্রদীপদের ঘোড়ায় উঠিয়ে নিরাপদে নেমে আসতে সাহায্য করেন।

Jammu and Kashmir Pahalgam Karnataka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy