Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Minority Community

NCSC: হরিয়ানায় দু’বোনকে ধর্ষণ-খুনে রিপোর্ট তলব

ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, ১৯ অগস্টের মধ্যে তা জানতে চেয়ে হরিয়ানা সরকারের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে তারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২১ ০৭:৪২
Share: Save:

‘‘ওরা চিৎকার করছিল। সাহায্য চাইছিল। আমি কিছুই করতে পারলাম না’’— ভাড়াবাড়ির এক চিলতে ঘরের বাইরে বসে কথাগুলি যিনি বলছিলেন, সেই মা মাত্র কয়েক দিন আগে নিজের দুই নাবালিকা মেয়েকে দেখেছেন চোখের সামনে গণধর্ষিতা হতে! দেখেছেন অপরাধীদের খাওয়ানো কীটনাশকের প্রভাবে এক রাতের মধ্যে একে একে দু’জনকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে! সে দিন কিছু করতে না-পারার যন্ত্রণার সঙ্গে মিশে রয়েছে খুন হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে মেয়েদের কীটনাশক খাওয়ানোর বিষয়টি কাউকে না জানানোর অপরাধবোধও।

বিজেপি শাসিত হরিয়ানার সোনীপতের এই ঘটনায় সম্প্রতি চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলার নির্দেশে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে জাতীয় তফসিলি জাতি আয়োগ (এনসিএসসি)। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, ১৯ অগস্টের মধ্যে তা জানতে চেয়ে হরিয়ানা সরকারের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে তারা। আলাদা আলাদা করে চিঠি গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি, সোনীপতের পুলিশ সুপার ও ডেপুটি কমিশনারের কাছে। হরিয়ানা পুলিশ সূত্রের দাবি, ময়না-তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে চার অভিযুক্তকেই। উদ্ধার হয়েছে কীটনাশকের শিশিগুলো। তদন্ত চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নির্যাতিতাদের এক জনের বয়স ১৫। অন্য জন মাত্র ১১। মাত্র এক মাস আগে পেটের দায়ে দুই মেয়ে এবং দুই ছেলের হাত ধরে বিহার থেকে হরিয়ানার সোনীপতে আসেন বছর ৩৫-এর ওই স্বামীহারা মহিলা। ঘরে জায়গা নেই। তাই ১৪ এবং ১৮ বছরের দুই ছেলে শুয়েছিল বাড়ির ছাদে। মেয়েদের নিয়ে ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন তিনি।

দিনটা ছিল ৫ অগস্ট। নির্যাতিতা দুই কিশোরীর মায়ের বয়ান অনুযায়ী, রাত ১টা নাগাদ হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়ে চার যুবক। তারা পাশেই ভাড়া থাকত। মায়ের চোখের সামনেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে নাবালিকা মেয়ে দু’টির উপর। দুই বোনই তখন মায়ের দিকে তাকিয়ে সাহায্যের আর্তি জানালেও মা কিছুই করতে পারেননি। ঘরের কোণে বসে সন্ত্রস্ত ভাবে পুরো ঘটনাটির সাক্ষী থেকেছেন শুধু। কিন্তু কেন? ওই মহিলার কথায়, ‘‘আমাকে ঘরের কোণে ঠেসে ধরে রেখেছিল ওদের এক জন। বলেছিল, চেঁচামেচি করলে আমাকে তো খুন করবেই, ছেলে-মেয়েরাও বাঁচবে না। আমার চোখের সামনেই ওরা মেয়ে দু’টোর উপর অত্যাচার করে গেল, আর আমি কিছুই করতে পারলাম না। এর আগে এতটা অসহায় কখনও মনে হয়নি নিজেকে।’’

এর পর দু’জনকেই জোর করে কীটনাশক খাইয়ে দেয় অভিযুক্তেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। সকলেরই বয়স ২২ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তবে আতঙ্কে সে কথাও জানাননি ওই মহিলা। সকলে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের সাপে কেটেছে।’’

এমনকি ছেলেদেরও কিছু জানাননি তিনি। মহিলার বড় ছেলের কথায়, ‘‘মা তো আমাদের অন্তত একবার জানাতে পারত! সারা রাত মা শুধু কেঁদে যাচ্ছিল। ভোর ছ’টা নাগাদ বোনেদের মাথা ব্যথা শুরু হয়। বমি করতে থাকে ওরা। তখনও মা কিছুই বলেনি।’’ ১২ কিলোমিটার পেরিয়ে দুই নাবালিকাকে দিল্লির এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে এক জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য জনের মৃত্যু হয় চিকিৎসা চলাকালীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minority Community Rape and Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE