ভুবনেশ্বর কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কেআইআইটি)-তে নেপালি ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে নানা মহলে। বিক্ষোভরত নেপালি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে ‘জাতিবিদ্বেষী’ এবং ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করার অভিযোগও উঠেছে। সেই আবহেই এ বার নেপাল সরকার জানাল, পরিস্থিতির উন্নতি না-হলে ওড়িশায় উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাওয়া নেপালি পড়ুয়াদের ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হবে তারা।
রবিবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই ছাত্রীর দেহ। খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, আচমকাই তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন কর্তৃপক্ষ। ওই ছাত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টিও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পড়ুয়াদের একাংশের সন্দেহ, এই দুইয়ের মধ্যে ‘যোগ’ থাকতে পারে। এই মৃত্যু নিয়ে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা। অভিযোগ, এর পরেই শুরু হয় বিক্ষোভকারী নেপালি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে নানা রকমের ‘জাতিবিদ্বেষী’ এবং ‘অপমানজনক’ মন্তব্য। পড়ুয়াদের জোর করে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপত্তারক্ষী-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরদিনই তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ওড়িশার ঘটনার পর পদক্ষেপ করেছে নেপাল সরকারও। ওড়িশায় আক্রান্ত নেপালি পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য নয়দিল্লির নেপাল দূতাবাস থেকে দুই আধিকারিককে ওড়িশা গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি শর্মা। যাঁরা হস্টেলে থাকতে চান কিংবা যাঁরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চান, তাঁদের সকলকেই সব রকমের সাহায্য করা হচ্ছে। এ জন্য একটি পৃথক সহায়তা ডেস্ক খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের শিক্ষা মন্ত্রক। কাঠমান্ডু জানিয়েছে, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভবিষ্যতে ওড়িশার যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাওয়া নেপালি ছাত্র-ছাত্রীদের ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ করতে পারে নেপাল সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ওই ছাত্রীর বাবাও। তাঁর দাবি, গত বেশ কয়েক মাস ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তাঁর মেয়ে। তাঁকে বার বার ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। নানা ভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল তাঁর উপর। অভিযোগ, একাধিক বার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দরজায় কড়া নাড়লেও সাড়া মেলেনি। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। কেন ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হলেন, তা জানতে এখনও তদন্ত চলছে।