Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

১০ মাসে ৬০ লক্ষ গেলেন কোথায়!  প্রশ্নের মুখে মোদী

এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইএসআই-এর পরিসংখ্যান দেখিয়ে মোদী সংসদে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, তাঁর জমানায় এক বছরে নতুন ১ কোটি চাকরি হয়েছে। এখন সেই প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসেবই বলছে, মাত্র দশ মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতা থেকে ৬০ লক্ষ ৪০ হাজার নাম বাদ গিয়েছে! তার মধ্যে ৪৬ লক্ষের বয়স ৩৫ বছরের কম। ইএসআই-এর খাতা থেকেও ২৩ লক্ষের নাম বাদ গিয়েছে।

প্রশ্নের মুখে।

প্রশ্নের মুখে।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি ছিল চার বছর আগে লোকসভা ভোটে জেতার অন্যতম অস্ত্র। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিই এখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের গলার কাঁটা। লক্ষ লক্ষ চাকরির হিসেব দিলেও দেশে নতুন চাকরির সংখ্যা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে মোদী সরকারের দেওয়া তথ্য থেকেই।

এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইএসআই-এর পরিসংখ্যান দেখিয়ে মোদী সংসদে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, তাঁর জমানায় এক বছরে নতুন ১ কোটি চাকরি হয়েছে। এখন সেই প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসেবই বলছে, মাত্র দশ মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতা থেকে ৬০ লক্ষ ৪০ হাজার নাম বাদ গিয়েছে! তার মধ্যে ৪৬ লক্ষের বয়স ৩৫ বছরের কম। ইএসআই-এর খাতা থেকেও ২৩ লক্ষের নাম বাদ গিয়েছে।

এই কর্মীরা গেলেন কোথায়? যাঁদের বয়স ৩৫ বছরের কম, তাঁরা নিশ্চয়ই অবসর নেননি। শ্রমিক সংগঠন সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘এর অর্থ একটাই, ওই ৪৬ লক্ষ লোকের চাকরি গিয়েছে। বা বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’

অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। তা হল, চাকরি থাকলেও পাকা কর্মীরা ঠিকা কর্মী হয়ে গিয়েছেন। ফলে পিএফ মিলছে না। কোনও সংস্থায় ২০ জন বা তার বেশি কর্মী কাজ করলে সেখানকার কর্মীরা পিএফের আওতায় আসেন। আগে যে কারখানায় অন্তত ২০ জন কাজ করতেন, এখন সেখানে ২০ জনের কম কাজ করছেন, এমনও হতে পারে। মোদী নোট বাতিল করার পরে অসংখ্য সংস্থা হয় বন্ধ হয়েছে, নয় বিপুল কর্মী ছাঁটাই করেছে।

শুক্রবার ইএসআই-এর হিসেবও প্রকাশ করেছে পরিসংখ্যান মন্ত্রক। ২০১৭-র সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮-র জুনের মধ্যে ইএসআই-এর খাতা থেকে ২৩ লক্ষের বেশি নাম বাদ গিয়েছে। এঁদেরও কি চাকরি গিয়েছে?

কোনও কর্মীর বেতন ১৫ হাজার টাকার বেশি হলে তাঁর নাম ইএসআই-এ নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক নয়। তপনবাবুর যুক্তি, ‘‘মাত্র দশ মাসে ২৩ লক্ষ শ্রমিকের বেতন বেড়ে ১৫ হাজার টাকা ছাপিয়ে গিয়েছে, এটা অবিশ্বাস্য। এঁদেরও একটা বড় অংশের চাকরি গিয়েছে বা কারখানা বন্ধ হয়েছে।’’

কর্মসংস্থান নিয়ে রাহুল গাঁধী নিয়মিত মোদী সরকারকে নিশানা করছেন। লন্ডনে গিয়েও তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘চিন দিনে ৫০ হাজার চাকরি তৈরি করছে। ভারতে হচ্ছে মাত্র সাড়ে চারশো!’’

মোদী সরকারের দাবি, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত নতুন ৪৭ লক্ষ চাকরি হয়েছে। ৬০ লক্ষ ৪০ হাজার জনের নাম পিএফ-এর খাতা থেকে বাদ গেলেও ১ কোটি ৭ লক্ষ নতুন নাম উঠেছে। কিন্তু যাঁরা বাদ গেলেন, সেই ৬০ লক্ষের বেশি লোক গেলেন কোথায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Emplyment EPF ESI Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE