Advertisement
০১ মে ২০২৪

যৌন হেনস্থার নয়া ফুটেজ, পুলিশের জালে ৬

পুলিশ প্রথমে বলেছিল কোনও প্রমাণই মিলছে না। অথচ সিসিটিভি ফুটেজ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ব্যাপারটা একেবারেই তেমন নয়।

সিসিটিভি ফুটেজে যৌন হেনস্থার ছবি ধরা পড়ল।

সিসিটিভি ফুটেজে যৌন হেনস্থার ছবি ধরা পড়ল।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

পুলিশ প্রথমে বলেছিল কোনও প্রমাণই মিলছে না। অথচ সিসিটিভি ফুটেজ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ব্যাপারটা একেবারেই তেমন নয়।

বেঙ্গালুরুতে বর্ষবরণের রাতে অবাধে যৌন হেনস্থা নিয়ে বিতর্ক চলছে গত কয়েক দিন ধরে। প্রযুক্তি শহরের রাস্তায় গত রবিবার রাতে কী ধরনের অশালীন আচরণ করা হয়েছিল মহিলাদের সঙ্গে, তার ভয়ঙ্কর ছবি উঠে এসেছে একটি আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে। পুলিশ ফুটেজটি পাওয়ার পরে শহর জুড়ে যৌন হেনস্থার ঘটনায় মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে।

পূর্ব বেঙ্গালুরুর কাম্মানহাল্লি ফিফথ মেন রোডের কাছে একটি বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, অটো থেকে নেমে এক তরুণী হাঁটছেন। তিনি ওই এলাকাতেই থাকেন। আদতে উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা। স্কুটারে দুই ব্যক্তি এসে হঠাৎ পথ আটকে দাঁড়ায়। চলন্ত স্কুটার ইউ টার্ন করে পার্ক করে দাঁড়িয়ে পড়ে তারা। তাদের এক জন স্কুটার থেকে নেমে দ্রুত মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায়।

কিছু বোঝার আগেই জোর করে জাপটে ধরে। স্কুটারের দিকে মেয়েটিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। অন্য লোকটি স্কুটারে বসে। মেয়েটি কোনও মতে প্রথম লোকটির হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। তার পরে চড় কষায় তাকে। মেয়েটির প্রতিরোধ মানতে না পেরে লোকটি এ বার সজোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় মেয়েটিকে। তার পরে দ্রুত পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে।

দেখুন সেই ভিডিও

এটি রবিবার রাত আড়াইটের ঘটনা। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার প্রবীণ সুদ জানিয়েছেন নির্যাতিতা তাদের কাছে আসেননি। সিসিটিভি ফুটেজ ওই এলাকার এক বাসিন্দার কাছ থেকে তাদের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজ যিনি দিয়েছেন তাঁর আবার দাবি, প্রথমে প্রশাসন বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি। তাই তিনি সংবাদপত্রের দফতরেও ফুটেজ পাঠান। পরিচয় জানাতে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির দাবি, বছর কুড়ির মেয়েটি কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে সোমবার তাঁদের আবাসনে আসেন ভিডিও ফুটেজ চাইতে। নির্যাতিতা তাঁকে বলেন, ‘‘কারা আমাকে এ ভাবে হেনস্থা করেছে জানি না। ভীষণ খারাপ অভিজ্ঞতা। পরে দেখলাম আমার টাকার ব্যাগও উধাও। তাই বুঝলাম কিছু করতে না পেরে রাগে সেটা নিয়ে চলে গিয়েছে।’’

কাম্মানহাল্লি এলাকায় এই নির্যাতিতার মতো বেঙ্গালুরুর বাইরে থেকে আসা অনেক ছাত্রী এবং কর্মরতা মহিলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। ফুটেজ দেখে তাঁদের প্রশ্ন, আবাসিক এলাকায় যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তা হলে মহিলারা এ বার কোথায় যাবেন?

কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর অবশ্য বলেছিলেন, বর্ষবরণের রাতের ভিড়ভাট্টায় অবাধ যৌন হেনস্থা হতেই পারে। এই ফুটেজ দেখে তিনি এ বার কী বলবেন, প্রশ্ন তুলছেন কাম্মানহাল্লির বাসিন্দারা। পরমেশ্বরের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটও। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের কুৎসিত নিন্দনীয় বিবৃতির পরে ওঁর মন্ত্রিত্বে থাকার অধিকার নেই।’’ শুধু অবাধ যৌন হেনস্থার পক্ষে যুক্তি দেওয়াই নয়, মন্ত্রী পরমেশ্বর জানান, পশ্চিমী ভাবধারা অনুকরণ করতে গিয়েই মেয়েদের এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বৃন্দা আজ বলেছেন, ‘‘এ ধরনের অপরাধ করেও পার পাওয়া যায়, এমন একটা ধারণা রয়েছে হেনস্থাকারীদের মনে। যেটা সিসিটিভি ফুটেজেও স্পষ্ট।’’ পরমেশ্বর এবং সমাজবাদী পার্টির মুম্বই শাখার প্রধান আবু আজমির ‘নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের’ জন্য পুলিশের কাছে আজ অভিযোগ জানিয়েছে দিল্লির মহিলা কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

footage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE