মুম্বই হামলার ধাঁচেই ভারতের বেশ কয়েকটি শহরে হামলার ছক কষেছিলেন তাহাউর রানা। দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সওয়াল করে এমনটাই জানিয়েছে এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। তাদের একটি সূত্র বলছে, কোর্টে আরও জানানো হয় যে, ১৭ বছর আগে কী ভাবে মুম্বই হামলার ছক কষা হয়েছিল, তা বোঝার জন্য পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হামলার মূলচক্রীকে হেফাজতে পাওয়া প্রয়োজন। এনআইএর আবেদন মেনে রানাকে ১৮ দিনের জন্য তাদের হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ বিচারক চন্দ্রজিৎ সিংহ।
এনআইএ হেফাজতে রানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েছেন বিচারক। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এক বার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে রানার। এক দিন অন্তর নিজের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তিনি। তবে সেখানে উপস্থিত থাকবেন এনআইএর আধিকারিকেরা। নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তিনি। এনআইএ হেফাজতে শুধুমাত্র একটি পেন ব্যবহার করতে পারবেন রানা, যার মুখ থাকবে ভোঁতা।
এনআইএর একটি সূত্র বলছে, রানাকে হেফাজতে চেয়ে তাদের আইনজীবী কোর্টে সওয়াল করে জানান, ষড়যন্ত্রের প্রত্যেক স্তর উন্মোচনের জন্য রানাকে জেরা করা প্রয়োজন। তদন্তকারীদের সন্দেহ, মুম্বইয়ে যে ছকে হামলা চালানো হয়েছিল, সেই ছকেই দেশের বেশ কিছু শহরে হামলার চালানোর ছক ছিল রানাদের। অন্য কোথাও সেই ছক কষা হয়েছিল কি না, সেই নিয়ে তদন্ত করছেন এনআইএ অফিসারেরা। সে কারণেই তাঁরা রানাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছেন। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, তদন্তের খাতিরে রানাকে ঘটনাস্থল-সহ বেশ কিছু জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে। ১৭ বছর আগে ঠিক কী ঘটেছিল, কী ছক ছিল হামলাকারীদের, নেপথ্যে আরও কেউ ছিলেন কি না, তা নিয়ে আরও তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা বলে খবর।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর পর পর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মুম্বই। তাতে মৃত্যু হয়েছিল ১৬৬ জনের। আহত হয়েছিলেন ২৩৮ জন। সেই বিস্ফোরণের অন্যতম চক্রী ছিলেন রানা, যাঁকে বৃহস্পতিবার আমেরিকা থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দিল্লির পালম বিমানবন্দরে নামার পর তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। সূত্রের খবর, তার পর থেকে রানার ঠিকানা এনআইএ-র সদর দফতরের নীচতলার ১৯৬ বর্গফুটের সেল। সেখানেই চলবে তাঁর জেরা।