Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নির্মলার প্রশ্নে কাঁচুমাচু বায়ুসেনা কর্তারা

সূত্রের খবর, সদস্যদের প্রশ্নের উত্তরে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলির বেহাল দশা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন অফিসারেরা। আর তারপরই তাঁরা ধমক খান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। নির্মলা বলেন, ‘‘শুধু সমস্যার কথাই বলে চলেছেন। কিন্তু তার সমাধান কোন উপায়ে হবে তা নিয়ে আপনারা কেউ কেন কোনও দিশা দেখাতে পারছেন না?’’

নির্মলা সীতারামন।

নির্মলা সীতারামন।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

চিন তার সীমান্তে প্রচুর সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করছে, এই তথ্য নিয়ে এমনিতেই উদ্বিগ্ন রয়েছে সাউথ ব্লক। তার উপর নতুন যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী দায়িত্বে এসেছেন তাঁর পরাক্রান্ত মেজাজ রাজধানীতে সুপ্রসিদ্ধ। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রকে থাকাকালীনই অফিসাররা থরোহরি থাকতেন নির্মলা সীতারামনের মেজাজের দাপটে! সব মিলিয়ে শীতের মুখে দাঁড়ানো রাজধানীতে উত্তাপ চড়ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের!

যার রেশ পড়ল গতকাল মন্ত্রকের সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে। এটি ছিল নির্মলা প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পরে এই কমিটির প্রথম বৈঠক। আলোচ্য বিষয় ছিল বায়ুসেনার বর্তমান দক্ষতার মূল্যায়ন, সমস্যা এবং তার সমাধানের রাস্তা। কমিটির সদস্য সাংসদেরা, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষাসচিব, বায়ুসেনার উপপ্রধান ও মন্ত্রকের অন্য কর্তারা।

আরও পড়ুন: পটেলের জঙ্গি-যোগের অভিযোগ ঘিরে তরজা

সূত্রের খবর, সদস্যদের প্রশ্নের উত্তরে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলির বেহাল দশা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন অফিসারেরা। আর তারপরই তাঁরা ধমক খান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। নির্মলা বলেন, ‘‘শুধু সমস্যার কথাই বলে চলেছেন। কিন্তু তার সমাধান কোন উপায়ে হবে তা নিয়ে আপনারা কেউ কেন কোনও দিশা দেখাতে পারছেন না?’’ স্বভাবতই অপ্রতিভ হয়ে পড়েন কর্তারা। তাঁরা জানান, পরামর্শদাতা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে তাঁরা সম্ভাব্য সমাধানসূত্র নিয়ে প্রস্তুত হয়েই আসবেন।

বিষয়টি ছিল বায়ুসেনার জরাগ্রস্ত বিমানপ্রসঙ্গ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বহু বারই জানিয়েছেন, দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ হলে সামাল দেওয়ার ক্ষমতা বায়ুসেনার নেই। কারণ বায়ুসেনার অনুমোদিত ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমানের বদলে হাতে রয়েছে মাত্র ৩৩ স্কোয়াড্রন। তার মধ্যেও ১০ স্কোয়াড্রন জরাগ্রস্ত বিমান বাদ যাওয়ার তালিকায় চলে গিয়েছে। কমিটির সদস্যরা জানতে চান সমাধানের পথ কী? সমাধানসূত্র না বলে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়, যে ভাবে জরাগ্রস্ত বিমানের সংখ্যা বাড়ছে তাতে ২০৩২-এর মধ্যে কমে ভারতের হাতে থাকবে মাত্র ১৮ স্কোয়াড্রন বিমান। সূত্রের খবর, কী ভাবে আবার উপযুক্ত সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাওয়া যায়, তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি অফিসারেরা। আর তখনই তেলেবগুনে জ্বলে ওঠেন সীতারামন। নির্দেশ দেন, অবিলম্বে শূন্যস্থান পূর্ণ করার পদক্ষেপগুলি জানাতে। আমতা আমতা করে কর্তারা জানান, পরবর্তী বৈঠকেই সেই উত্তর তৈরি করে আসবেন তাঁরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে ভারতের যুদ্ধবিমানে দুর্ঘটনার হার এত বেশি কেন? কোথায় গলদ রয়েছে? জানা গিয়েছে তারও সদুত্তর দিতে পারেননি অফিসারেরা। দায় এড়াতে বলেছেন, বছরে মাত্র দশটি দুর্ঘটনা হয়, যা আন্তর্জাতিক গড়ের তুলনায় কম। স্বাভাবিকভাবেই এই উত্তরে মেজাজে ঘৃতাহুতি হয়েছে নির্মলার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE