এই ছবি এখন অতীত। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
মহাজোট সরকারের বৃহত্তম শরিক তথা লালুপ্রসাদের দল আরজেডি-র সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই নানা ইস্যুতে টানাপড়েন চলছিল নীতীশ কুমারের। দুর্নীতির মামলায় লালু এবং তাঁর ছোট ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীপ্রসাদ যাদব সিবিআই তদন্তের মুখে পড়ায় সেই টানাপড়েন আরও বেড়েছিল। অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত তেজস্বীর, বলছিল নীতীশের দল জেডি(ইউ)। নীতীশ নিজে প্রথম কয়েক দিন নীরব থাকার পর নিজেও জানান, তেজস্বীর পতগ্যাগই কাম্য। কিন্তু লালুপ্রসাদ এবং তাঁর গোটা দল তেজস্বীর পাশেই ছিল। তেজস্বী পদত্যাগ করবেন না বলে আরজেডি-র তরফে বার বার জানানো হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: নীতীশকে মোদীর অভিনন্দন, সঙ্গে আসার ডাক
শুধুমাত্র তেজস্বী যাদবেও আটকে ছিল না টানাপড়েন। আরজেডি এবং জেডি(ইউ)-এর প্রায় গোটা নেতৃত্বই পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করে। তেজস্বীর নামে অভিযোগ উঠেছে মানেই এই নয় যে তিনি অপরাধী— বক্তব্য আরজেডির। নীতীশকে আক্রমণ করে আরজেডি নেতারা বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেও কোনও সাধু-সন্ত নন।’ বুধবার সকাল থেকেই আরজেডি-র তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল যে নীতীশ কুমার নিজের মন্ত্রিসভা থেকে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকে বরখাস্ত করতে পারেন। তাই লালু নিজেও এ দিন নীতীশের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। তিনি বলেন, ‘‘নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী আমিই বানিয়েছিলাম। এ বার তাঁকেই ঠিক করতে হবে যে তিনি মহাজোটের ভার বহন করতে পারবেন কি না।’’
কিন্তু তেজস্বীকে বরখাস্ত করার রাস্তায় হাঁটেননি নীতীশ কুমার। সন্ধ্যায় সকলকে চমকে দিয়ে তিনি নিজেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। নীতীশ বলেছেন, ‘‘আমি কারওকে পদত্যাগ করতে বলিনি। অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে আমি নিজেই সরে দাঁড়িয়েছি।’’ তেজস্বী যাদব এবং লালুপ্রসাদ যাদবের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল বলে নীতীশ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তেজস্বীকে বলেছিলাম, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে কি না তা ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে দিতে। তিনি এবং লালু যে হেতু কোনও ব্যাখ্যা দেননি, সে হেতু মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনও পথ আমার আমার সামনে খোলা ছিল না।’’