Advertisement
E-Paper

ফরাক্কাই ভেঙে দিন, মোদীকে আর্জি নীতীশের

ফরাক্কা বাঁধটাই যত নষ্টের গোড়া! ওর জন্যই বন্যার কবলে পড়ে বিহার। তাই ফরাক্কা বাঁধকে একেবারে ভেঙে ফেলার দাবি নিয়ে ‘আদরণীয় প্রধানমন্ত্রীজি’-র দ্বারস্থ হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। নীতীশের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৫
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায় নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায় নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

ফরাক্কা বাঁধটাই যত নষ্টের গোড়া! ওর জন্যই বন্যার কবলে পড়ে বিহার। তাই ফরাক্কা বাঁধকে একেবারে ভেঙে ফেলার দাবি নিয়ে ‘আদরণীয় প্রধানমন্ত্রীজি’-র দ্বারস্থ হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। নীতীশের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির মুখে পশ্চিমবঙ্গও পাল্টা ‘ডসিয়ের’ তৈরি করে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিহারের বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ নিতে মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ফোন করেন নীতীশকে। তখনই ঠিক হয়, দিল্লি গিয়ে রাজ্যের হাল সবিস্তার জানাবেন নীতীশ। সোমবার ৭ রেসকোর্সে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন নীতীশ। আলোচনার সময় মোদীর হাতে একটি স্মারকলিপি দেন নীতীশ। তাঁর অভিযোগ, বিহারে গঙ্গা অববাহিকায় বন্যার জন্য ফরাক্কা বাঁধ দায়ী। বক্সার থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত গঙ্গার নাব্যতা অনেকটাই কমেছে। ফলে জল জমে তা দু’পার ছাপিয়ে যাচ্ছে। ফলে বন্যা কবলিত এলাকা বাড়ছে। তাই ফরাক্কা বাঁধের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি। ফরাক্কা বাঁধ ভেঙে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন নীতীশ। বিষয়টি মূল্যায়নের জন্য তিনি একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর দাবি জানালে মোদী তা মেনে নিয়েছেন।

ফরাক্কা বাঁধের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এই বাঁধ ভেঙে দেওয়া হলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়বে পশ্চিমবঙ্গ। প্রতি বর্ষায় ভাসবে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। এ ছাড়া গরমের সময়ে কলকাতা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলসঙ্কটে ভুগবে। নাব্যতা হারিয়ে কার্যত ধ্বংস হয়ে যাবে কলকাতা বন্দর। পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিহারের দাবি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিষয়টি জানি না। আর প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের আলোচনার বিষয়ে আমার বলার কোনও এক্তিয়ারনেই।’’ রাজ্যের সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে শ্বেতপত্র ধাঁচের একটি ‘ডসিয়ের’ তৈরির কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। ফরাক্কা নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য সেখানেই তুলে ধরা হবে।

নীতীশের দাবি প্রসঙ্গে নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘আমি এক সময় ফরাক্কা বাঁধের সমালোচনা করেছি। কিন্তু ১৯৭৫ সাল থেকে বাঁধটি রয়েছে। এর ফলে ফরাক্কা থেকে মোহনা পর্যন্ত পরিবেশ বদলে গিয়েছে। এক ধরনের ইকোলজি তৈরি হয়েছে। কোনও ভাবে বাঁধ ভেঙে দেওয়া হলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে পরিবেশের উপর।’’

ফরাক্কা বাঁধ ভেঙে দিলে আর কী হতে পারে? এর জেরে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিপন্ন হবে ইলিশ, গাঙ্গেয় ডলফিনরা। তা ছাড়া গঙ্গাতীরবর্তী পশ্চিমবঙ্গের ৪৪টি পুরসভা ও তিনটি পুর নিগম বিপুল জল সঙ্কটে ভুগবে।

Nitish Kumar PM Narendra Modi farakka bridge Ganga Bihar Flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy