Advertisement
E-Paper

শেষ আর্জি ঝুলে, আজ থেকেই জেইই মেন

ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের অভিযোগ, জেদ বজায় রাখতে গিয়ে অতিমারির এমন ভয়ঙ্কর সময়েও শেষমেশ পড়ুয়াদের সেই পরীক্ষার মুখেই ঠেলে দিল কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি নিয়ে সোমবার শুনানি হল না সুপ্রিম কোর্টে। ভিডিয়ো-বার্তায় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, জেইই-মেন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবারই। বরং যাতায়াত-সহ কোনও বিষয়ে যাতে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধায় পড়তে না-হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের সহায়তা চাইলেন তিনি। পড়ুয়াদের আশ্বাস দিলেন, রাজ্যগুলি যাতে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার খেয়াল রাখে, তার জন্য প্রায় প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের অভিযোগ, জেদ বজায় রাখতে গিয়ে অতিমারির এমন ভয়ঙ্কর সময়েও শেষমেশ পড়ুয়াদের সেই পরীক্ষার মুখেই ঠেলে দিল কেন্দ্র। মাথায় রাখল না তাঁদের অসুবিধার কথা। পরীক্ষা পিছোনোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছয় রাজ্য যে ভাবে একেবারে শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টে কড়া নেড়েছে, তাতে নিছক বিরোধের বার্তা দেওয়া ছাড়া আর কিছু লক্ষ্য ছিল কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।

সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা জেইই-মেন (১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর) এবং ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট-ইউজির (১৩ সেপ্টেম্বর) দিন ঘোষণার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। উত্তপ্ত হয়েছে রাজনীতি। প্রশ্ন উঠেছে, আগুনের গতিতে সংক্রমণ ছড়ানোর এই সময়ে পড়ুয়াদের পরীক্ষার মুখে ঠেলে দেওয়ার যুক্তি কী? এর জেরে সংক্রমণ বাড়লে, কে তার দায় নেবে? কী ভাবে দূর থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসবেন পড়ুয়ারা? সুপ্রিম কোর্ট পরীক্ষার পক্ষে নির্দেশ দেওয়ার পরেও তা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি রাখা হয়েছেল কেন্দ্রের কাছে। জেইই-মেন এবং নিট-ইউজি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ২৮ অগস্ট সর্বোচ্চ আদালতেরও দ্বারস্থ হন ছয় রাজ্যের মন্ত্রী। সোমবার তার শুনানি না-হওয়ায় হতাশ পরীক্ষা-পিছোনোর দাবিতে সরব পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের ভিডিয়ো-বার্তা, “কোভিডের কারণে এর আগে জেইই, নিট একাধিক বার পিছোতে হয়েছে। পড়ুয়াদের যাতে পুরো একটি বছর নষ্ট না-হয়, তার জন্য এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। (জেইই-র) প্রায় সমস্ত পড়ুয়া অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন, কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী যাতায়াত, সুরক্ষা সমেত সমস্ত বিষয়ে তাঁরা যেন সব রকম সহায়তা করেন। অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। সে জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” মন্ত্রকের দাবি, মোট ৮.৫৮ লক্ষ জেইই পরীক্ষার্থীর মধ্যে এ দিন সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন ৭.৭৭ লক্ষেরও বেশি জন।

আরও পড়ুন: জেইই দিতে ভরসা গাড়ি, বাসও দিচ্ছে রাজ্য

পড়ুয়াদের একাংশের অবশ্য প্রশ্ন, অনেক পরীক্ষার্থীকে যখন ভিন্ জেলা থেকে পরীক্ষা দিতে আসতে হবে, তখন ৩১ অগস্টও পশ্চিমবঙ্গ সরকার লকডাউনের পথে হাঁটল কেন। যেখানে নিখরচায় বাসে করে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছে মধ্যপ্রদেশ। পড়ুয়াদের অসুবিধা হতে না-দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গোয়া। লকডাউন শিথিল করছে ওড়িশা। যাতায়াতে সুবিধা করে দিতে হাত বাড়িয়েছে দিল্লি আইআইটি। গাড়ির বন্দোবস্ত করছেন আইআইটি বম্বের প্রাক্তনীরাও। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল টুইট করে জানিয়েছেন, পরীক্ষার দিনগুলিতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়ে মুম্বই শহরতলির বিশেষ ট্রেনগুলিতে যাতায়াত করতে পারবেন।

সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার দিনেই প্রশ্ন উঠেছিল, এত দেরি করে কেন সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন বিরোধীরা? এ কি নিছক রাজনৈতিক বিরোধিতার স্বার্থে? তখন কংগ্রেসের অভিষেক মনুসিঙ্ঘভির দাবি ছিল, “জানি হাতে সময় কম। তবু বিষয়টির গুরুত্ব বিচার করে সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত বিষয়টি শুনবে বলেই আশা।” কিন্তু সোমবার শুনানি না-হওয়ায় সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে। পড়ুয়াদের উদ্দেশে নিশঙ্ক বলেছেন, “কাল থেকে জেইই-র পরীক্ষা শুরু। তার জন্য শুভকামনা। নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিন। কোনও অসুবিধা হলে, যোগাযোগ করুন এনটিএ-র হেল্পলাইন নম্বরে।” প্রবীণ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যন স্বামী টুইট করেছেন, “সাঙ্ঘাতিক পরিস্থিতির মধ্যে তোমাদের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ঈশ্বর তোমাদের সহায় হোন।”

Supreme Court of India JEE Mains NEET Ramesh Pokhriyal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy