Advertisement
E-Paper

নাশকতার আশঙ্কা নেই, দাবি সেনার

চিনের হুমকি বা বাংলাদেশি জেহাদিদের নাশকতার চেষ্টা—কোনও কিছুতেই দক্ষিণ অসমের উদ্বেগের কারণ নেই। বরাক উপত্যকার তিন জেলা এবং ডিমা হাসাওর জনতা নিরাপদে রয়েছেন— এমনই জানাল ভারতীয় সেনাবাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৪

চিনের হুমকি বা বাংলাদেশি জেহাদিদের নাশকতার চেষ্টা—কোনও কিছুতেই দক্ষিণ অসমের উদ্বেগের কারণ নেই। বরাক উপত্যকার তিন জেলা এবং ডিমা হাসাওর জনতা নিরাপদে রয়েছেন— এমনই জানাল ভারতীয় সেনাবাহিনী।

আর্টিলারি কর্নেল দীপক কুমার আজ জানান, অহেতুক আতঙ্কে ভোগেন অনেকে। আধাসামরিক বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। কোথাও আশঙ্কাজনক কিছু মনে হয়নি। শিলচরে প্রশাসনিক অফিসারের দায়িত্বে থাকা কর্নেল দীপক কুমারের কথায়, ‘‘সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা ও গোয়েন্দা তৎপরতায় পুরোপুরি সক্রিয় রয়েছে সেনাবাহিনী। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বক্ষণ প্রস্তুত।’’ তবে এই ধরনের পরিস্থিতি আসতে পারে বলে মনে করেন না তিনি।

দীপকবাবুর বক্তব্য, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে কিছু বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন পড়ে। কারণ সন্ত্রাসবাদীরা হামলার জন্য ওই সময়টাকে বিশেষ ভাবে বেছে নেয়। তখন কোনও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তারক্ষী এবং সরকার বাড়তি চাপে পড়ে। সে জন্যই কয়েক দিন আগে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা দেখা গিয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড রয়েছে শিলচরে। দক্ষিণ অসমের চার জেলায় তার কর্মপরিধি। রয়েছে একটি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড কার্যালয়ও। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শারীরিক পরীক্ষার জন্য আগ্রহী যুবকদের ডাকা হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ফের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে পারে। কর্নেল দীপক দালালদের সম্পর্কে পুরো সতর্ক করে দেন। প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, ‘‘কোথাও কোনও নিযুক্তিতে উৎকোচের ব্যাপার নেই।’’

তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ নিযুক্তির আগেই দালালদের সঙ্গে লেনদেন সেরে নেন। ফলে নিজেদের মেধা ও শারীরিক কসরত দেখিয়ে যাঁরা সাফল্য পান, দালালরা তাঁদের কাছে নিজের কৃতিত্ব দাবি করে। অন্যরাও সে সব কথায় বিশ্বাস করে নেন।’’ দীপকবাবু চ্যালেঞ্জ জানান, নিযুক্তি পর্বের পরে যেন বাতিলদের কাউকে চাকরি পাইয়ে দিয়ে দালালরা কৃতিত্ব জাহির করেন।

শারীরিক পরীক্ষা বা কাগজপত্র যাচাই করার সময় কাউকেই যে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না, সে কথার উল্লেখ করে সেনা কর্নেল জানান, দালালদের তৎপরতা থাকে বাইরে। সে দিকটা দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় পুলিশের।

আরও একটি ব্যাপারে তিনি স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দীপকবাবু জানান, সেনাবাহিনীতে যাঁরা চাকরি করেন, জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় তাঁদের বাড়িঘরের বাইরে কাটাতে হয়। ছুটিছাঁটার সমস্যার দরুন তাঁরা সব সময় বাড়িঘরের বিষয় তদারকি করতে পারেন না। চাকরি সেরে ফেরার পর দেখা যায়, সম্পত্তি বিবাদে জড়িয়ে আদালতে ছোটাছুটি করে সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয় তাদের। বাড়িঘরে দীর্ঘ অনুপস্থিতির দরুন অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের সম্পত্তি বেদখল হয়ে যায়। এই ঘটনা শুধু দক্ষিণ অসম নয়, দেশ-ভর একই চিত্র বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তাঁর আশঙ্কা, এতে সেনাবাহিনীর প্রতি যুবকদের আকর্ষণ কমতে পারে। দ্বিতীয়ত, মানবিক ও সামাজিক দিক থেকেও বিষয়টি দুঃখজনক। সারা জীবন দেশের জন্য খাটনির পর নিজের সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে, এটা সঠিক নয়। এ দিকে, রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বাহিনীর এক শীর্ষকর্তাও কর্নেল দীপক কুমারের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, ‘‘বরাক উপত্যকা সন্ত্রাসবাদীদের টার্গেট হতে পারে না। চার রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ এবং বাংলাদেশ সীমান্তের দরুন বরাক উপত্যকার বিশেষ সুবিধা রয়েছে। সন্ত্রাসবাদীরা প্রয়োজনে একে করিডর হিসেবে ব্যবহারের কথাই ভাবে সবসময়। আর করিডরকে কেউ কখনও অস্থির করে তোলে না।’’ তিনিও অহেতুক উদ্বিগ্ন হওয়ার বদলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

Barak Valley Indian army soldier
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy